মনসুকা, ২৮ জানুয়ারী, ২০২৪: মনসুকার বনহরিসিংহপুরে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর সাংস্কৃতিক মঞ্চে ২৮ জানুয়ারী সারাদিন নানান সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এই অনুষ্ঠানের আয়োজক ছিলেন সুব্রত দোলই, দুলাল চন্দ্র দেড়ে, তুষ্টনাথ বায়েন, বলাই চন্দ্র দোলই, অমিয় কুমার সামন্ত।
উদ্বোধনী সংগীত পতাকা উত্তোলন বিদ্যাসাগর মহাশয় এর প্রতিকৃতিতে মাল্যদান করে অনুষ্ঠান সূচনা হয়। এরপর বনহরিসিংহপুর সহ পার্শ্ববর্তী অঞ্চলের পুরানো এবং নতুন সাংস্কৃতিক জগতের ব্যক্তিবর্গ ও ছাত্র-ছাত্রীরা, দেশাত্মবোধক গান, কবিতা, নৃত্য ও নাটক পরিবেশন করে। অনুষ্ঠানে উপস্থিত সকলেই অংশগ্রহণকারীদের পরিবেশনায় মুগ্ধ হন।
অনুষ্ঠানে অনেকে বিভিন্ন গানে ঐতিহ্যবাহী নৃত্য পরিবেশন করে। অনুষ্ঠানে আধুনিক গান, রবীন্দ্র সংগীত, নজরুল গীতি বিভিন্ন ঐতিহ্যবাহী সঙ্গীত পরিবেশন করা হয়। বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্যে অংশগ্রহণ করেছিলেন অনুপ সামন্ত, অবিরাম কর, ঝিলিক বাগ, নিরঞ্জন মান্না, কবি সাহিত্যিক শান্তি নাথ গোস্বামী, তপন গোস্বামী, অকূল সামন্ত, নিমাই চন্দ্র জানা, বংশী বদন সামন্ত, আরও অনেকে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পঞ্চায়েত সদস্য তনুশ্রী পাঁজা ও পূর্ণিমা সামন্ত। উপস্থিত ছিলেন বনহরিসিংহপুরের ও পার্শ্ববর্তী গ্রামের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ ছাত্র ছাত্রী ও ছোট ছোট কচিকাঁচারা। তাঁরা সকলেই অনুষ্ঠানে সন্তুষ্ট ছিলেন।
অনুষ্ঠানে কবি সাহিত্যিক শান্তি নাথ গোস্বামীর বক্তব্য
অনুষ্ঠানের কবি সাহিত্যিক শান্তি নাথ গোস্বামী বলেন, সভ্যতার বিবর্তনের মধ্য দিয়ে বর্তমান সমাজ পৌঁছেছে। সমাজে নানান অপসংস্কৃতি ঘটেই চলেছে। সংস্কৃতি যদি সভ্যতার বাহন হয় তাহলে কেন বিভিন্ন নারকীয় ঘটনাগুলি ঘটছে। তাহলে কি আমাদের সমাজ সে সংস্কৃতির জায়গায় পৌঁছাতে পারেনি? দিকে দিকে সাংস্কৃতিক চর্চা বন্ধ হয়ে গিয়েছে।
সেজন্য এই সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে সমাজকে আবার সুন্দর করে তোলার জন্য আমাদের এই প্রয়াস" এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আমরা আমাদের এলাকার সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে তুলে ধরতে চাই। আমরা চাই আমাদের এলাকার মানুষ সাংস্কৃতিক চর্চায় আরও বেশি উৎসাহী হোক।"
ছাত্র-ছাত্রীদের অভিব্যক্তি
অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে বনহরিসিংহপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা খুবই আনন্দিত হয়েছেন। তারা বলেন, "এই অনুষ্ঠান আমাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের সাথে পরিচয় করিয়ে দিয়েছে।" ছাত্র-ছাত্রীরা বলেন, "আমরা এই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে আমাদের সাংস্কৃতিক চর্চার প্রতি আরও বেশি উৎসাহী হয়েছি।"
অনুষ্ঠানের উদ্যোক্তাদের প্রতিক্রিয়া
অনুষ্ঠানের উদ্যোক্তা সুব্রত দোলই সহ, উদ্যোক্তারা বলেন, "এই অনুষ্ঠান অত্যন্ত সফল হয়েছে। সাংস্কৃতিক চর্চার সাথে যুক্ত নতুন এবং পুরনো সহ ছাত্র-ছাত্রীদের পরিবেশনা ছিল অসাধারণ।" তাঁরা বলেন, "এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আমরা আমাদের এলাকার সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে তুলে ধরতে যেমন পেরেছি। তেমনি পুরানো সাংস্কৃতিক চর্চার মানুষের সাথে নতুন সাংস্কৃতিক চর্চার সাথে যুক্ত ছেলেমেয়েদের মেলবন্ধন ঘটেছে। ফলে সমাজে একটা সাংস্কৃতিক চর্চার রেস যেমন একটা থাকবে তেমনি সমাজ সুন্দর হয়ে উঠবে"।
তাঁরা আরো বলেন, "আমরা আগামী বছরও এই অনুষ্ঠান আরও সুন্দর ও সার্থকভাবে উদযাপন করব।"এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বনহরিসিংহপুরের এলাকাবাসী সাংস্কৃতিক চর্চায় আরও বেশি উৎসাহী হয়ে উঠেছেন। এই অনুষ্ঠান এলাকার সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে তুলে ধরতে এবং সাংস্কৃতিক চর্চার প্রসার ঘটাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।