শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ঘোষণা: সেনাপ্রধানের বক্তব্য

কোলকাতা, ২৪ জুলাই ২০২৪:প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর, বাংলাদেশের সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের ঘোষণা দিয়েছেন। সেনাপ্রধান জানান, সকল দলের সাথে আলোচনা করে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে এবং রাষ্ট্রপতির সাথে আলোচনার মাধ্যমে সরকার গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হবে।


জেনারেল জামান বলেন, "আমরা প্রধান দলের নেতাদের সাথে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করেছেন। এখন আমরা রাষ্ট্রপতির সাথে আলোচনা করে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করবো।" তিনি সকল পক্ষকে সেনাবাহিনীর প্রতি আস্থা রাখার আহ্বান জানান এবং আশ্বস্ত করেন যে সকল দাবির পূরণ হবে এবং শান্তি ফিরিয়ে আনা হবে।

সেনাপ্রধান বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সাথে বৈঠক করেন। বৈঠকে জামায়াতের আমির, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির নেতৃবৃন্দ, জুনায়েদ সাকী ও ডঃ আসিফ নজরুল উপস্থিত ছিলেন। আওয়ামী লীগের কেউ উপস্থিত ছিল না। তিনি জনগণকে ভাঙচুর ও সংঘর্ষ থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেন, "আমাদের সহযোগিতা করুন এবং ধৈর্য ধরুন। আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করছি।"

জেনারেল জামান জানান, সরকারের রূপরেখা এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে এবং রাষ্ট্রপতির সাথে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। 

আন্দোলনকারীদের সাথে ডঃ আসিফ নজরুলের কথোপকথন হয়েছে বলে জানিয়ে জেনারেল জামান বলেন, "আশা করি তারা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনবে এবং আমরা শান্তির দিকে এগিয়ে যাবো।" তিনি সেনাবাহিনীকে শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য জনগণের সহযোগিতা চেয়েছেন।

সেনাপ্রধান বলেন, "যদি পরিস্থিতি শান্ত হয়, তাহলে কারফিউ বা জরুরি অবস্থা রাখার প্রয়োজন হবে না।" তিনি সেনাবাহিনী ও পুলিশকে গোলাগুলির নির্দেশনা না দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন এবং আশা প্রকাশ করেন যে তার বক্তব্যের পর পরিস্থিতির উন্নতি হবে।

ব্রিফিংয়ের আগেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে চলে যান। আন্দোলনকারীরা দুপুর থেকে ঢাকায় প্রবেশ করতে শুরু করেন এবং পুলিশ বা সেনাসদস্যরা তাদের বাধা দেয়নি।

জুন মাসে কোটা নিয়ে আন্দোলন শুরু হলেও জুলাই মাসের শুরু থেকে এটি তীব্র আকার ধারণ করে। ছাত্র বিক্ষোভের ফলে ঢাকাসহ সারাদেশে সহিংসতা ঘটে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গুলিবর্ষণ, দুই শতাধিক মানুষের মৃত্যু, বিভিন্ন স্থাপনায় আগুন এবং ইন্টারনেট বন্ধের ঘটনা ঘটে।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ১৯ জুলাই রাতে সরকার কারফিউ জারি করে এবং সেনা মোতায়েন করা হয়। তিনদিন সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হয় এবং ইন্টারনেট বন্ধ করে দেওয়া হয়।

শনিবার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবি নিয়ে আন্দোলন শুরু হয়। রবিবার আওয়ামী লীগ সারাদেশে জমায়েতের কর্মসূচি দেয়, যার ফলে সহিংসতায় অন্তত নব্বই জন মানুষ মারা যায়। সহিংসতায় প্রায় তিনশো লোকের মৃত্যু ঘটে।

রবিবার সন্ধ্যা থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য কারফিউ জারি করা হয়। আন্দোলনকারীরা ঢাকার বিভিন্ন প্রবেশপথ দিয়ে শহরে প্রবেশ করে এবং দুপুরের পর ঢাকা তাদের নিয়ন্ত্রণে চলে যায়।

৫ জুন হাইকোর্ট কোটা বাতিল করে এবং এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে ছাত্র বিক্ষোভ শুরু হয়। সুপ্রিম কোর্ট হাইকোর্টের রায় বাতিল করে কোটা সংস্কারের নির্দেশ দিলেও সহিংসতার কারণে নতুন করে সরকারের পতনের দাবি জানানো হয়।

Shyamal Kumar Rong

আমি মনসুকা খবরের সাংবাদিক। খবর, ভিডিও, তথ্য, গল্প পাঠাতে যোগাযোগ করুন। ফোন/হোয়াটসঅ্যাপ ৯৭৭৫৭৩২৫২৫.

নবীনতর পূর্বতন

বিজ্ঞাপন

Mansuka khabar

বিজ্ঞাপন

Mansuka khabar
Mansuka khabar