নিউজ ডেস্ক, মনসুকা খবর, ১৯ নভেম্বর: প্রতিবছর ১৯ নভেম্বর পালিত হয় আন্তর্জাতিক পুরুষ দিবস। এই দিনটি বিশ্বজুড়ে সমাজে পুরুষদের অবদান, স্বাস্থ্য, এবং লিঙ্গসমতার গুরুত্ব তুলে ধরতে উদযাপন করা হয়। এবছরও বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে দিনটি উদযাপিত হয়েছে।
১৯৯৯ সালে ত্রিনিদাদ ও টোবাগোর ড. জেরোম টিলাকসিং প্রথম এই দিবসের সূচনা করেন। তিনি বিশ্বাস করতেন, পিতৃত্ব ও পুরুষত্বের ইতিবাচক দিকগুলি সামনে আনা প্রয়োজন। দিনটির উদ্দেশ্য পুরুষদের স্বাস্থ্য বিষয়ক সচেতনতা বৃদ্ধি, ইতিবাচক পুরুষ আদর্শ প্রতিষ্ঠা, এবং লিঙ্গ বৈষম্য দূর করা।
এবছর কলকাতাসহ পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় পুরুষ দিবস উপলক্ষ্যে আলোচনা সভা, স্বাস্থ্য শিবির, এবং সচেতনতা র্যালির আয়োজন করা হয়েছে। কলকাতার বিড়লা প্ল্যানেটোরিয়ামে এক বিশেষ আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়, যেখানে শিক্ষাবিদ, মনোবিদ, এবং সমাজকর্মীরা পুরুষদের মানসিক স্বাস্থ্যের গুরুত্ব নিয়ে বক্তব্য রাখেন।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, সমাজে পুরুষদের "শক্তিশালী" এবং "অভিযোগহীন" থাকার চাপ প্রায়ই তাদের মানসিক স্বাস্থ্য উপেক্ষা করে। " বিশেষজ্ঞরা বলছেন, "পুরুষরা প্রায়ই তাদের আবেগ প্রকাশ করতে সংকোচ বোধ করেন, যা তাদের মানসিক স্বাস্থ্যকে দীর্ঘমেয়াদে ক্ষতিগ্রস্ত করে।" "একজন পিতা শুধুমাত্র পরিবারের রুটি রোজগারকারী নন, বরং সন্তানের মানসিক ও শারীরিক বিকাশেও তার সমান ভূমিকা রয়েছে। এই ভূমিকার প্রশংসা করা উচিত।"
"পুরুষ দিবস মানে শুধুমাত্র পুরুষদের উদযাপন নয়, বরং পুরুষ এবং নারীর মধ্যে সমানাধিকারের বার্তা ছড়িয়ে দেওয়া।"
ভারতের বাইরে যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে দিনটি ঘটা করে উদযাপন করা হয়। বিশেষত, কর্মক্ষেত্রে পুরুষদের চ্যালেঞ্জ এবং তাদের সাফল্যকে সামনে আনা হয়।
পুরুষ দিবস উপলক্ষ্যে বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন রক্তদান শিবির এবং কর্মশালার আয়োজন করেছে। দক্ষিণ কলকাতার একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা 'মেনস ওয়েলফেয়ার সোসাইটি' এর উদ্যোগে মেনটাল হেলথ ক্যাম্প অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে বিশেষজ্ঞরা বিনামূল্যে পরামর্শ দেন।
সমাজে পুরুষদের ভূমিকা, ত্যাগ এবং অবদানকে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য পুরুষ দিবস একটি গুরুত্বপূর্ণ মঞ্চ। তবে, এই উদযাপনের পাশাপাশি পুরুষদের মানসিক স্বাস্থ্য এবং সমাজে লিঙ্গসমতার গুরুত্ব নিয়েও সচেতন হওয়া দরকার। এটি শুধুমাত্র পুরুষদের জন্য নয়, বরং সমগ্র সমাজের জন্যই একটি ইতিবাচক পরিবর্তনের বার্তা বহন করে।