শ্যামল রং, ঘাটাল: ঘাটাল ব্লকের বলরামপুর অত্যায়িক প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এক অনন্য উদ্যোগে উন্মোচিত হল তিন মহান ব্যক্তিত্ব—ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, ক্ষুদিরাম বসু এবং সুভাষচন্দ্র বসুর মূর্তি। গ্রামীণ এলাকায় এই ধরনের সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক উদ্যোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে উৎসাহের সঞ্চার করেছে।
শুধু মূর্তি উন্মোচনই নয়, এই উপলক্ষে বিদ্যালয়ে আয়োজিত হয় একটি রক্তদান শিবির, যেখানে মোট ৩৬ জন স্বেচ্ছায় রক্তদান করেন। রক্তদাতাদের তালিকায় ছিলেন বিদ্যালয়ের শিক্ষক, অভিভাবক এবং স্থানীয় যুব সমাজ। শিবিরটি সফল করতে সহায়তা করেন স্থানীয় স্বাস্থ্যকর্মীরা।
উপস্থিত ছিলেন ঘাটালের মহকুমা শাসক সুমন বিশ্বাস মহাশয়, ঘাটাল ব্লকের বিডিও অভীক বিশ্বাস মহাশয়, ঘাটাল পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি শ্যামলী সর্দার মহাশয়া, সহ-সভাপতি বিকাশ কর মহাশয় এবং বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক অচিন্ত্য সিংহরায় মহাশয়। এছাড়াও, বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্রছাত্রী এবং স্থানীয় বাসিন্দারাও এদিনের অনুষ্ঠানে অংশ নেন।
গ্রামের এক কোণে এমন একটি উদ্যোগের জন্য মহকুমা শাসক সুমন বিশ্বাস মহাশয় বিশেষভাবে প্রশংসা করেন বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের। তিনি উল্লেখ করেন, এই ধরনের উদ্যোগ শিক্ষার্থীদের কাছে ইতিহাস এবং মানবিক মূল্যবোধের পাঠ পৌঁছে দেয়। স্কুলের পরিবেশে একসঙ্গে বিদ্যাসাগর, ক্ষুদিরাম এবং নেতাজির মূর্তি শিশুদের মনে দেশপ্রেম এবং শিক্ষার গুরুত্বকে জাগ্রত করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
বিদ্যালয় চত্বরে এদিনের অনুষ্ঠান ছিল উৎসবমুখর। মূর্তি উন্মোচনের আগে এক শোভাযাত্রার মাধ্যমে স্থানীয় মানুষজনকে এই উদ্যোগ সম্পর্কে জানানো হয়। বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা দেশাত্মবোধক গান এবং আবৃত্তি পরিবেশন করে। রক্তদান শিবিরটি ঘিরে স্থানীয় যুবকদের মধ্যে ব্যাপক উদ্দীপনা লক্ষ্য করা যায়।
বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক অচিন্ত্য সিংহরায় জানান, এটি শুধু একটি অনুষ্ঠান নয়, বরং প্রান্তিক এলাকায় শিশুদের ইতিহাসের পাঠ শেখানোর এক প্রয়াস। বিদ্যালয়ের বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্ম এই উদ্যোগ থেকে অনুপ্রাণিত হবে বলেই তাঁর আশা।
এই ধরনের উদ্যোগ বলরামপুর গ্রামকে যেমন নতুন পরিচিতি এনে দিচ্ছে, তেমনি সামাজিক কর্মকাণ্ডে স্থানীয় মানুষদের অংশগ্রহণ বাড়ানোর প্রেরণা যোগাচ্ছে। বিদ্যালয়ের এই কর্মকাণ্ড শুধু বিদ্যালয় নয়, গোটা ঘাটাল ব্লকের জন্যই গর্বের বিষয় হয়ে উঠেছে।