ঘাটাল পাঁশকুড়া রাস্তা মরন ফাঁদ তৈরি হয়েছে কেন

ঘাটাল: প্রত্যহ সকালে নিউজ পেপার খুললেই নজরে আসে , জেলার পাতায় বা বড় করে প্রথম পাতায় স্থান পেয়েছে পথ দূর্ঘটনায় খবর ।

দিন দিন উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পেয়ে চলেছে এই ধরনের প্রান হরনকারী খবর । এর কারণ , প্রতিকার , গাফিলতি , আশ্বাস নিয়ে অনেক লেখালেখি হয় আর খবরটা মানুষের মনের মধ্যে থাকতে থাকতেই আবার একটা দূর্ঘটনা এই ভাবেই আতঙ্কের মধ্যে আশঙ্কার মধ্যেই দিন অতিবাহিত হয় ।


এই ধরনের পথ দুর্ঘটনা প্রায়ই দেখা যায় , ঘাটাল পাঁশকুড়া রাজ্য সড়কের উপর । এই রাজ্য সড়কের উপর ঘটে যাওয়া দুর্ঘটনা কে কেন্দ্র করে সোশ্যাল মিডিয়ায় ও নানা রকম দৈনন্দিন পত্রপত্রিকায় ইতিপূর্বেই অনেক লেখালেখি হয়েছে । সকলেই সর্বত্র উল্লেখ করেছেন যে ঘাটাল ও পাঁশকুড়ার মধ্যবর্তী রাজ্য সড়ক একটি মরণফাঁদ । তার কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন যে উল্লেখিত রাস্তার অংশে দীর্ঘদিন ধরেই মেরামতির কাজ হচ্ছে না । দাসপুর , টালিভাটা, কলোড়া, সোনামুই, ক্যাশাপাট - রাস্তার উপর হাট । ঘাটাল পাঁশকুড়া বাসস্ট্যান্ডের সবজি বাজারের , বেলতলার মাছ বাজারের , খুকুড়দার মাছ ও সবজি বাজারের , ক্যাশাপাটের ফুল বাজারের  অন্যমনস্ক মানুষ চলে আসে রাস্তার উপর । সাথে সাথে আধুনিক  ও মাত্রাতিরিক্ত যানবাহন চলাচলের ফলে রাস্তাটি এই প্রবাদে পরিণত হয়েছে । প্রশস্ত রাস্তার দাবি তুলেছেন সর্বস্তরে কিন্তু কতটা কার্যকরী হয়েছে তা দৈনন্দিন যাত্রীরা অনেকেই জানেন । কিন্তু এই রাজ্য সড়কে মরণফাঁদে পরিণত হবার পেছনে অনেক গুলি কারণ বিশেষ ভাবে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করলেও একটি বিশেষ উল্লেখযোগ্য কারণ অনেকেরই অজানা যেটা আমরা আজ আলোচনা করবো ।
       এই রাজ্য সড়কটিকে মরনফাঁদে পরিনত করেছে দিন-রাত্রি অহরহ ছুটে চলা ট্রাক । প্রত্যহ ভোর তিনটে থেকে সকাল দশটা পর্যন্ত উল্লেখিত সড়কের উপর দিয়ে দশ-চাকার ও বার-চাকার ট্রাক চন্দ্রকোনা দিক থেকে কলকাতার দিকে অবিরাম ছুটে চলেছে । যাতে ওভারলোডে আছে কংক্রিটের বাড়ি তৈরির চিপস ও বালি , যেগুলি আসে যথাক্রমে চন্দ্রকোনা চিপস , লাল মাটি (মোরাম), গড়বেতা - বাঁকুড়ার ( তালডাংরা ) থেকে বালি সবজি ইত্যাদি। 
    এবার কথা হলো যে সমস্ত ট্রাক গুলি চন্দ্রকোনা , গরবেতা , বাঁকুড়া থেকে চিপস, বালি , সবজি , কাঠ ইত্যাদি নিয়ে কলকাতার দিকে যায় , সেই সমস্ত ওভারলোড ট্রাক গুলি ঘাটালের উপর দিয়ে মেছোগ্রামের রাস্তাটা কে ব্যবহার করে । ফলে রাস্তাটি খুব তাড়াতাড়ি নষ্ট হয়ে যায়।  যা ধীরে ধীরে মরণফাঁদ তৈরি করে।
   

 এর পেছনের প্রধান ঘটনাটি হল চন্দ্রকোনারোড থেকে ক্ষীরপাই হয়ে ঘাটাল ময়রাপুকুর মোড় পর্যন্ত রাস্তাটি যানজট না হলেও , ঘাটাল শহর থেকে মেছোগ্রাম পর্যন্ত যথেষ্ট যানজট পুর্ন এলাকা । এই যানজট পূর্ণ এলাকার মধ্য দিয়েও ট্রাকগুলো আসার কারণ হলো চন্দ্রকোনা রোড থেকে কলকাতায় ন্যাশনাল হাইওয়ে হয়ে ( চন্দ্রকোনারোড -গোদাপিয়াশাল - মেদিনীপুর- চৌরঙ্গী - ডেবরা )  আসতে তিনটে টোলগেট (মেদিনীপুর অকেজো , ডেবরা সক্রিয় , ধুলাগড় সক্রিয় ) পেরিয়ে  আসতে হয় । সেখানে এক একটি ট্রাককে মোটা অংকের টোলট্রাক্স দিতে হয় ।
অন্যদিকে ঘাটাল- পাঁশকুড়া রাজ্য সড়ক ব্যবহার করলে একটি টোল ট্যাক্স (ধুলাগড়) দিতে হয় , টাকাও কম লাগে উপরন্তু দুরত্বও কম , আর যদি রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে কেউ হাত পাতে তাকে ছেঁড়া -ময়লা অতি সামান্য ছুড়ে দিলেই হয় , যত ঝুঁকি পুর্ন দূর্ঘটনা প্রবল এলাক হোক সহজেই অতিক্রম করার চিন্তাভাবনা করা যায় ।

আর এই সাহস - টোল-ফাঁকি দেবার জন্যই ঘাটাল শহরের মধ্য দিয়ে ট্রাক গুলির যাওয়া । আর এই ট্রাক গুলির জন্যই রাস্তার এত দ্রুত নষ্ট হয়ে যাওয়া , ট্রাক গুলির জন্যই এত বেশি যানজট , ট্রাক গুলি জন্যই এত দূর্ঘটনা ।  এই কারণটি যদি প্রশাসন একটু ভাবেন তাহলে হয়তো ঘাটাল- পাঁশকুড়া রাজ্য সড়কের মরনফাঁদ নামটি  বদলানো সম্ভব ।

Shyamal Kumar Rong

আমি মনসুকা খবরের এডিটর। মনসুকা খবরে আপনি যেকোনো খবর, ভিডিও, তথ্য বা গল্প আমাদের সাথে শেয়ার করতে পারেন। আপনার তথ্য আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। ফোন বা হোয়াটসঅ্যাপ: ৯৭৭৫৭৩২৫২৫

নবীনতর পূর্বতন
Mansuka khabar

বিজ্ঞাপন

Mansuka khabar