ঘাটালের ঝুমি নদীতে বিষ প্রয়োগ করে মাছ মারছে

গতকাল ঝুমি  নদীর বুকে কীটনাশক প্রয়োগ করেছেন কিছু অসাধু ব্যক্তি। এর ফলে বহু মাছ মারা গেছে ঝুমি  নদীতে। এর ফলে জল যেমন  দূষিত  হল তেমনি নদীর বাস্তুতন্ত্র বিঘ্নিত হল।

মানুষ এখনো কবে সচেতন হবে? এই সময় যখন পরিবেশ পরিবেশ নিয়ে এত জল্পনা কল্পনা করা হচ্ছে। এই পরিবেশকে টিকিয়ে রাখার নানান পরিকল্পনা গ্রহণ করা হচ্ছে। যাতে করে বাস্তুতন্ত্র কে সঠিক পর্যায়ে রাখা সম্ভব হয়। কারণ এই সময়ে দাঁড়িয়ে বিজ্ঞানীরা এখনো মহাবিশ্বের কোথাও এরকম পৃথিবী খুঁজে পাননি যেখানে প্রাণের অস্তিত্ব আছে ।  একমাত্র পৃথিবীতে প্রাণের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার প্রাণপণ চেষ্টা করা হচ্ছে।  তেমনি কিছু মানুষ না জেনে না বুঝে পৃথিবীতে প্রাণের অস্তিত্ব কে ধ্বংসের পথে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন।
প্রতীকী ছবি

  এ বিষয়ে বড় ঘটনা বা উদাহরণ থাকলেও  বিস্তারিত আলোচনায় না গিয়ে আমরা মনসুকা ঘাটালের মধ্যে ঘটে যাওয়া ছোট ঘটনা  নিয়ে আলোচনা করতে যাচ্ছি।

 যে বিষয়টি তুলে ধরবো অনেকের কাছে সেটি অতি সাধারণ হতে পারে । তবে এই ঘটনাটি একটি বাস্তুতন্ত্র কে ধ্বংস করার পেছনে যথেষ্ট বড় কারণ বলে আমার মনে হয়।

এই কয়েকদিন আগেই ঘাটালে শিলাবতী নদীর বুকে মৎস্য দপ্তর থেকে কয়েক হাজার মৎস্য নদীবক্ষে ছেড়েছেন।  তার যথেষ্ট কারণ আছে।  আমরা যদি দেখি কিছু দিন আগের কথা ভাবি  মাত্র পনের বছর আগে এই নদীর বুকে অর্থাৎ শিলাবতী বা মনসুকার ঝুমি নদীতে বহু মাছ পাওয়া যেত । তুলনামূলক এখন আর মাছ পাওয়া যায় না । তার কারণটা আমরা অনেকেই জানি হয়তো বা অনেকেই জানিনা।  যারা জানেন না তারা জেনে রাখুন।  আমরা যত চাষাবাদ করতে গিয়ে জমিতে কীটনাশক ব্যবহার করছি সেই সমস্ত কীটনাশক জলের সাথে মিশছে এবং মাটির সাথে মিশছে যে কারণে জল এবং মাটি দূষিত হচ্ছে।  আর এই জল এবং মাটি দূষণের ফলস্বরূপ পৃথিবীর বুকে ছোট ছোট বাস্তুতন্ত্র ধীরে ধীরে নষ্ট হচ্ছে।  অর্থাৎ মাছ বা অন্যান্য কীটপতঙ্গ পোকামাকড় এর বাসস্থান নষ্ট হওয়ার কারণে এই সমস্ত কীটপতঙ্গ গুলি পৃথিবীতে অবলুপ্তি হয়ে যাচ্ছে।
প্রতীকী ছবি
 একইভাবে যার প্রভাব পড়ছে এই নদীতে।  আর নদীর বাস্তুতন্ত্র নষ্ট হওয়ার কারণেই নদীতে এমনভাবে আজ মাছ পাওয়া যাচ্ছে না।  একধারে যেমন একটি কারণ অপরধারে  আরও একটি কারণ রয়েছে । সেটি হল মানুষ বড় মাছ যেমন ধরছে তার পাশাপাশি ছোট মাছ ও ধরে ফেলছে যে কারণে ছোট মাছ যেমন বড় হতে পারছে না তেমনি বড় না হওয়ার কারণে তারা নতুন ডিম পোনা তৈরি করতে পারছে না । এরফলেই নদীতে নতুন করে মাছ সৃষ্টির না হওয়ার কারণে নদীর বুকে মাছ উৎপাদন ও কম হচ্ছে।
এর সাথে সাথে আরেকটি বড় কারণ হলো যে কিছু অসাধু ব্যক্তি নদীর উপর কীটনাশক প্রয়োগ করার কারণে  একসাথে বহু মাছ মারা যাচ্ছে । এবং সাথে সাথে জল দূষিত হচ্ছে।  যে কারণে মাছেদের  ভীষণভাবে অসুবিধা হচ্ছে তাদের বেঁচে থাকার পিছনে।  এই বিষ প্রয়োগ করার ফলেই নদীবক্ষে বা নদীর যে বাস্তু তন্ত্র রয়েছে তা বিঘ্নিত হচ্ছে এ কারণে নদী মধ্যে তেমন আর মাছ পাওয়া যাচ্ছে না।  সরকার মৎস্যচাষীদের সাহায্যার্থে যেমন নদীতে মৎস্য ছাড়ছেন তেমনি একই ভাবে নজর রাখতে চাইছেন যাহাতে নদীর বাস্তুতন্ত্র সঠিক থাকে।  যদি নদীর বাস্তুতন্ত্র সঠিক থাকে এবং ছোট মাছ না মারা যায় তাহলে নদী থেকে বহু মাছ পাওয়া যাবে আর সেই মাছ বছর ধরে সাধারণ মানুষ ধরে খেতে পারবেন । আর যদি এভাবে নদীতে বিষ প্রয়োগ করে নদীর মাছ কে ধ্বংস করে ফেলা হয় হয়তোবা একদিন নদীতে আর কোন মাছ পাওয়া যাবে না যেটা মানুষ জাতির কাছে খুবই খারাপ হয়ে দাঁড়াবে।  বাঙালির খাদ্যাভাসে তেমনভাবে আর মাছ পাওয়া যাবেনা।  শুধু তাই নয় পৃথিবীর মধ্যে জীবজগৎ কে টিকিয়ে রাখতে গেলে এভাবে কোন জায়গার বাস্তুতন্ত্র কে ধ্বংস করে ফেলা যাবে না।  এভাবে বাস্তুতন্ত্র ধ্বংস থাকলে একসময় পৃথিবী জনমানব শূন্য একটিতে পরিণত হবে।
প্রতীকী ছবি

 অনেক মানুষই বলেন যে আমরাতো কয়েকদিনের মধ্যেই মারা যাবো তাহলে এত ভেবে কি লাভ। তাদেরকে একটা কথাই বলব আপনার আগে বহু বছর ধরে মানুষ পৃথিবীতে ছিল তারা যদি পৃথিবী ধ্বংস করে ফেলত তাহলে আপনি কিন্তু এই পৃথিবীতে আসতে পারতেন না পৃথিবীর এতকিছু রূপ দেখতে পেতেন না।  ঠিক তেমনি যদি আপনিও এই পৃথিবী বিভিন্ন সম্পদকে সুন্দর সুষ্ঠুভাবে ব্যবহার করেন আপনার উত্তরসূরিরাও এই পৃথিবীর বুকে বহুদিন পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারবে ।

তাই সাধারণ মানুষের কাছে একটি বিশেষ অনুরোধ এই যে দয়া করে নদীর বুকে কীটনাশক দিয়ে নদীর বাস্তুতন্ত্র নষ্ট করবেন না।  এটি একটি আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ।  

Comments

Popular posts from this blog

ঘাটালের বন্যা: প্রাকৃতিক দুর্যোগ, রাজনৈতিক ঘূর্ণাবর্ত এবং একটি অসমাপ্ত মহাপরিকল্পনার বিশদ বিশ্লেষণ

মনসুকা লক্ষ্মীনারায়ণ উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ফুটবল প্রতিযোগিতা: আগামীকাল ফাইনাল ও পুরস্কার বিতরণ

জেনে নিন কবে খুলবে স্কুল!