আষাঢ় শেষ হওয়ার আগেই বর্ষার তেজে ছন্দপতন বঙ্গে।শুরুর দিকের সেই দাপট যেন ভোজবাজির মতোই উধাও। আষাঢ়ের শুরুতেই গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গে যে প্রবল প্রতাপ দেখাতে শুরু করেছিল বর্ষা, মাসের ফুরোনোর আগেই সেই দাপট প্রায় নেই।
১১ জুন কলকাতায় সরকারি ভাবে বর্ষা শুরু হওয়ার এক সপ্তাহের মধ্যেই গাঙ্গেয় বঙ্গে স্বাভাবিকের থেকে অনেকটাই বেশি ছিল বৃষ্টি পড়ার হার।এর মধ্যে একদিনে ১৪৪ মিলিমিটার বৃষ্টি হওয়ায় জুনের গড় বৃষ্টিপাতের পরিমাণকে প্রায় ছুঁয়ে ফেলেছিল এ বছর জুনের বৃষ্টি। তবে জুলাইয়ে সেই তেজ হারিয়ে বর্ষায় ঘাটতির পরিমাণ ক্রমশই বাড়ছে।
একই দৃশ্য উত্তরবঙ্গেও। আবহবিদদের মতে, আপাতত রাজ্যে বর্ষা কিছুটা দুর্বল হয়ে পড়েছে। সেই কারণেই বৃষ্টির পরিমাণ কমের দিকে।জুলাইয়ের বৃষ্টি প্রসঙ্গে মৌসম ভবন জানাচ্ছে, এ বছর ১ থেকে ১০ জুলাই পর্যন্ত গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গে বর্ষার ঘাটতি প্রায় ১১%। উত্তরবঙ্গ ও সিকিমে এই ঘাটতির পরিমাণ ১৪%।
তবে জুনে উদ্বৃত্ত বর্ষার পরিমাণ প্রায় ২৭% হওয়ার ফলে গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ এখনও সেই ভাবে জুলাইয়ের ঘাটতি অনুভব করতে পারছে না। রাজস্থান থেকে নাগাল্যান্ড পর্যন্ত বিস্তৃত নিম্নচাপ অক্ষরেখা উত্তরবঙ্গের উপর দিয়ে যাওয়ায় জুলাইয়ে উত্তরবঙ্গের বেশ কয়েকটি জেলায় ভারী, অতিভারী এবং চরম ভারী বৃষ্টি হয়েছে।
তবুও বর্ষার ঘাটতি মেটেনি।১ জুন থেকে ১০ জুলাই পর্যন্ত সময়সীমা ধরলে উত্তরবঙ্গ ও সিকিমে সার্বিক ভাবে বৃষ্টির প্রায় ৭% ঘাটতি রয়েছে। গোটা বাংলার নিরিখে বিচার করলে পশ্চিমবঙ্গে শুধু জুলাইতে এখনও পর্যন্ত ১৪% ঘাটতি রয়েছে। তবে ১ জুন থেকে ১০ জুলাই পর্যন্ত হিসেব করলে বাংলা ১১% উদ্বৃত্ত বর্ষা পেয়েছে।
মৌসম ভবনের আবহবিদরা জানাচ্ছেন, বর্ষা এক টানা সক্রিয় থাকে না বলেই এমন হয়েছে। কোনও নিম্নচাপ বা ঘূর্ণাবর্ত তৈরি হলে বর্ষার সক্রিয়তা ফের বাড়বে।মৌসম ভবনের পূর্বাভাস, সোম-মঙ্গলবার নাগাদ মধ্য ও পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে একটি নিম্নচাপ দানা বাঁধার সম্ভাবনা রয়েছে।