ইতালির অভ্যন্তরেই ছোট্ট একখণ্ড স্বতন্ত্র দেশ। চারিদিক ঘেরা ভূভাগেই। আয়তনে বড়োজোর ২৪ বর্গমাইল। আর জনসংখ্যা মাত্র ৩৪ হাজার। সান মারিনো। ছোট্ট এই দেশের অস্তিত্বের সম্পর্কে গোটা বিশ্বের কতজনই বা জানেন! অথচ, এবার টোকিও অলিম্পিকের মঞ্চকে হাতিয়ার করেই ইতিহাসের পাতায় নাম তুলে ফেলল পৃথিবীর পঞ্চম ক্ষুদ্রতম দেশ সান মারিনো। ছিনিয়ে নিল তিন তিনটি অলিম্পিক পদক।
১৯৬০ সালে। সেই প্রথম অলিম্পিকে অংশগ্রহণ করা সান মারিনোর। তারপর কেটে গেছে ৬১ বছর। তবে অধরাই থেকে গিয়েছিল অলিম্পিক। এবার টোকিওতে পদকের খরা কাটল সান মারিনোর। এবারের অলিম্পিকে অংশ নিয়েছিলেন সান মারিনোর মাত্র ৫ জন প্রতিযোগী।
আর তাতেই অপার সাফল্য। শুটিং ইভেন্টেই এবার বাজিমাত করল ছোট্ট রাষ্ট্রটি। আনল তিন-তিনটি পদক। চলতি অলিম্পিকের শুরুতেই ব্রোঞ্জ পদক এনেছিলেন সান মারিনোর মহিলা শুটার আলেসান্দ্রা পেরিলি। আর তারপরেই বিশ্বের ক্ষুদ্রতম অলিম্পিকজয়ী দেশ হিসাবে ইতিহাসের পাতায় নাম তুলেছিল সান মারিনো। পরবর্তী মিক্সড ইভেন্টেও জিয়ান মার্কো বের্তির সঙ্গে জোট বেঁধে রুপোর পদক আনেন আলেসান্দ্রা।
এর আগে লন্ডন ও রিও অলিম্পিকেও আলেসান্দ্রার হার না মানা লড়াই নজর কেড়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত চতুর্থ স্থানেই থামতে হয় তাঁকে। তবে এবার লক্ষ্যভেদে সাফল্য পেলেন সান মারিনোর তরুণী। ভারত তো বটেই, অন্যান্য বহু দেশই এ বছর অলিম্পিকের মঞ্চে হাজির হয়েছিল বিরাট বাহিনী নিয়ে। যুক্তরাষ্ট্র, চিন, রাশিয়া, ব্রিটেনের কথা বাদ দিলে, বাকিদের কিন্তু সাফল্য এসেছে হাতে গোনা কয়েকটা ক্ষেত্রেই।
সেখানে দাঁড়িয়ে মাত্র ৫ জন প্রতিযোগী নিয়ে ৩টি পদক-জয় সত্যিই ঐতিহাসিক। বিস্ময়করও বটে। সান মারিনোর এই কীর্তিই এখন গোটা বিশ্বের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু। আর তা হবে নাই বা কেন। আয়তনে ক্ষুদ্র হলেও, খেলোয়াড়দের জন্য যে বিশেষ পরিকাঠামো গড়ে তুলেছে ছোট্ট এই দেশটির প্রশাসন। যে জায়গায় এখনও বহু বহুগুণ পিছিয়ে রয়েছে ভারত। সান মারিনো সরকারের এই উদ্যোগও সমান ভাবে প্রশংসনীয়।