কলকাতার স্বনামধন্য কলেজ থেকে সায়েন্স নিয়ে বিএসসি পাশ করা আলাপন , জন্ম-প্রতিবন্ধী। আলাপনের পদযুগল আর পাঁচজন মানুষের মত নৈসর্গিক নয় অর্থাৎ বাম পা , ডান পায়ের চেয়ে অপেক্ষাকৃত শীর্ণ ও দুর্বল , ফলে স্বাভাবিক ভাবে চলাফেরা করতে তাকে কোন না কোন অবলম্বনের সাহায্য নিতেই হয় । অন্যদিকে বাল্যকাল থেকেই আলাপন পড়াশোনার সাথে-সাথে রামায়ণ ,
মহাভারত , বেদ , উপনিষদ , গ্রহ-নক্ষত্র ও আদিম মানুষের জীবন যাপনের উপর ভিত্তি করে রচিত নানা ধরনের ছোট- বড় গল্পের বই পড়তে ও উল্লেখিত বিষয়গুলির উপর ভিত্তি করে বড়দের মুখে গল্প শুনতে ভীষন ভালোবাসতো । আর এই সব গল্পের অভ্যন্তরস্থ বিষয়বস্তু গুলিকে ভিত্তি করে নিজেই - নিজেকে নানা ধরনের প্রশ্ন করতো , যেমন সারারাত চাঁদের বুড়ি বট গাছের মূলদেশে বসে সুতা কাটে কেন ? উড়োজাহাজের সাথে তারার সংঘর্ষ লাগেনি কেন ? উড়োজাহাজে বজ্রপাত পড়লে সবাই কি মারা যাবে ? মেঘে রেখা টানার জন্য রকেটের পিছনে কে বসে থাকে ? ঘুঁড়িতে চড়ে স্বর্গে যাওয়া যায় ? মেঘে কত জল আছে যে এত বৃষ্টি হয় ? দেবতারা স্বর্গে থাকে কেন ? মানুষ মরলে স্বর্গে যায় , জ্যান্ত মানুষ স্বর্গে কি যেতে পারে ? মনের অন্দরে উদিত হওয়া এই সব প্রশ্ন গুলি যাকে সম্মুখে পায় সে , তাকেই জিজ্ঞাসা করতো । এই অত্যাচার থেকে পিতা- মাতা , শিক্ষক মহাশয় সহ পাড়া - প্রতিবেশী কেউ নিস্কৃতি পেতো না । ফলে এই নিয়ে আলাপনের বাবা - মা'কে ছেলের সম্পর্কে আড়ক্ষ্যাপা, পাগলা , অল্প বয়সে পেকে গিয়েছে , কানা খোঁড়া, এক গুন বাড়া , ওরে আমাদের খোঁড়া বিজ্ঞানী সহ কত ধরনের অসম্মান জনক বিশেষণ শুনতে হয়েছে তার কোন হিসাব নেই । তবে আলাপন তার শারীরিক ও সামাজিক প্রতিবন্ধকতাকে জয় করে মাধ্যমিক , উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় যথাক্রমে স্টারমার্ক ও প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হওয়ার পর , সে তার জিজ্ঞাসাকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে ভারতীয় প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ , ইন্ডিয়ান স্পেস রিসার্চ অর্গানাইজেশন সহ বড় বড় রিসার্চ সেন্টারে কাজ করতে চেয়ে ফর্ম ফিলাপ করতো । এখন আলাপন কৈশোর অতিক্রম করে যৌবনে পদার্পণ করেছে তবে তার বাল্যকালের ন্যায় কোন কিছুর ব্যাপারে খুটিনাটি জিজ্ঞাসার আগ্রহ এখনো যায়নি। শুধুমাত্র পড়াশোনা ও বয়সের বৃদ্ধির ফলে জিজ্ঞাসার ধরন অনেকটাই বদলে গিয়েছে , যেমন মানুষ পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ জীব কেন ? দেবতা বলতে মানুষ আসলে কাদের বলতে চেয়েছে ? আমরা কি স্বর্গে যেতে পারবো ? ধর্মগ্রন্থকে কি আধুনিক বিজ্ঞানের সুত্র বলতে পারি ? হ্যলোজিনেশন কিভাবে কাজ করে ? টাইম ট্রাভেল কি সম্ভব ? আধুনিক পৃথিবীর তরঙ্গের গুরুত্ব কতখানি ? এই সব নানা ধরনের জিজ্ঞাসার কারণে বাল্যকালের " কানা খোঁড়া একগুন বাড়া " প্রবাদ তার এখনো ঘুচেনি ।
এমতাবস্থায় কলেজের বিভাগীয় প্রধানের দায়িত্বে , কলেজ অতিক্রম করার পর আলাপন কলেজেরই কয়েকজন নির্বাচিত ছাত্রছাত্রীদের সাথে বিমানপথে মুম্বাই বেড়াতে যাচ্ছে । এটাই হলো তার প্রথম বিমানে চড়ার আনন্দঘন অনুভূতি , তাই বেশ কয়েকদিন আগে থেকেই ইচ্ছাপূরণকৃত আনন্দবিগলিত অনুভুতির মাঝেই নির্ধারিত দিনে সঠিক সময়ে বিমান কর্তৃপক্ষের নির্দেশে এয়ারপোর্টে উপস্থিত হওয়া , টিকিট পরিক্ষা , লাগেজ জমা দেওয়া , গাড়িতে চড়ে বিমানে ওঠা , নির্দেশ মেনে সিটবেল্ট বাঁধার পর , শিহরীত শরীরে হঠাৎ ঝাকুনি দিতেই আনন্দ থিতিয়ে যেতে শুরু করলে । আলাপন বিভোরনয়নে কিছুক্ষন জানালার মধ্যেদিয়ে বাহিরের দিকে তাকিয়ে সামনের সিটে বসা বিভাগীয় প্রধান সম্মাননীয় রামকিঙ্কর বাবুকে জিজ্ঞেস করে বলল -,
--- স্যার ; আমাদের বিমান মুম্বাই পৌঁচ্ছাতে কতক্ষণ সময় লাগবে ?
রামকিঙ্কর বাবু এরিয়া ফিপটিন সংক্রান্ত হাতের ইংরেজী ম্যাগাজিন অন্যমনস্ক ভাবে উল্টাতে উল্টাতে আলাপনের জিজ্ঞাসার উত্তরে বললেন ,
--- কত আর সময় লাগবে আলাপন , বড়জোর দুই থেকে তিন ঘণ্টা । এমনিতেই আমরা যদি ট্রেন সহযোগে রওনা দিতাম তাহলে হয়তো তিরিশ ঘন্টার আশপাশ সময় লাগতো ।
কথার মাঝেই আলাপন বাতায়নে চোখ রাখে , আকাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা সাদা-সাদা পুঞ্জীভূত মেঘের ফাঁক দিয়ে, কখনো দৃশ্য কখনো অদৃশ্য বিস্তীর্ণ ফাঁকা এলাকা , জলাশয় , বনাঞ্চলের মাঝে গ্রাম- শহর জনবসতি দেখতে থাকে আর দেখতে দেখতে বলতে শুরু করে ,
--- স্যার, সত্যিই মানুষ আজ আধুনিকতার উচ্চ শিখরে পৌঁছে গিয়েছে । এই আধুনিকতাকে পাথেও করে স্বর্গ - মর্ত - পাতালে সমান ভাবে বিচরণ করছে । তবু দেখুন স্যার মানব সভ্যতার সঠিক ইতিহাস নিয়ে তর্কের অন্ত নেই ?
--- শোনো আলাপন , পৃথিবীর বুকে মানব সভ্যতা, বুদ্ধি ও বিকাশের উপর নির্ভর করেই শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করেছে । এই শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করেছে বলেই , মানব সভ্যতার সঠিক ইতিহাস নিয়ে এত বেশি তর্ক আলোচনা হচ্ছে , মানুষ যদি শুধুমাত্র আর পাঁচটা জীবের মত হতো তাহলে মানব সভ্যতার ইতিহাস নিয়ে কোন আলোচনাই , কারণ অন্ধকারে তো কিছু খুঁজে পাওয়া যায় না , আলোর প্রয়োজন নয় । এই আধুনিকতা বিজ্ঞান হল সেই আলো । প্রথমত একদল বিজ্ঞানী মানব সভ্যতার ইতিহাস ও তার শ্রেষ্ঠত্বের কারণ হিসেবে বিবর্তন বাদকে উপস্থাপন করছেন । দ্বিতীয়ত আর একদল বিজ্ঞানী মানব সভ্যতার শ্রেষ্ঠত্বের কারণ হিসেবে এলিয়েন মতবাদ প্রতিষ্ঠা করার আপ্রাণ চেষ্টা করে চলেছেন । এই জায়গায় দাঁড়িয়ে কোন মতবাদ সঠিক সেটাই আলোচনার বিষয় ।
--- তাহলে স্যার আপনি কোন মতবাদ বা যুক্তিকে প্রধান্য দিবেন ?
--- আমি কোন একটিমাত্র মতবাদ বা যুক্তিকে প্রধান্য দিতে পারছি না , বরং দুটি মতবাদ বা যুক্তিকে সমান গুরুত্ব দিয়ে এতোদিন একটি জায়গায় মিলিত করার চেষ্টা করে আসছি ।
--- সেটা আবার কি রকম স্যার । আজ স্যার তাহলে আমি আপনার থেকে দুইটি মতবাদের মিলিত রূপটাই শুনতে চাই । আর যদি আমাদের এই দুই থেকে আড়াই ঘন্টার বিমান যাত্রার মধ্যেই বলেন তো , সোনায় সোহাগা !
--- তুমি যখন বলছো তবে বলি শোন । আসলে কি জানো আলাপন বিজ্ঞানের উন্নতির ফলে , আজ নতুন নতুন যন্ত্রপাতি , উন্নত মানের মহাকাশ যান তৈরি হয়েছে । এই সব মহাকাশ যান ব্যবহার করে অতি সহজেই মানুষ মহাকাশে পৌঁছে যাচ্ছে , ফলে মহাকাশ গবেষণায় নতুন মাত্রা পেয়েছে । এই জায়গায় দাঁড়িয়েই মানব সভ্যতার সঠিক ইতিহাস নিয়ে ভিন্ন-ভিন্ন আলোচনার, নতুন নতুন অভিমুখ উন্মোচিত হচ্ছে । বিজ্ঞানীদের মতে প্রোটোবায়েন্ট থেকে ক্রমপর্যায়ে এককোষী প্রাণী , জলজ প্রাণী , উভচর প্রাণী , সরীসৃপের আবির্ভাব । তারপর সরীসৃপ থেকে একদিকে পক্ষী অপরদিকে স্তন্যপায়ী প্রাণী আবির্ভাব ঘটেছে । আর এই স্তন্যপায়ী প্রাণীই অভিযোজিত হতে হতে একদা বানর , পরবর্তীকালে এই বানর আদিম মানুষের মধ্যে দিয়ে আজকের আধুনিক মানুষে রুপান্তরিত হয়েছে । এটা আসল কথা এর কোন বিকল্প নেই ।
যদি আরও বিস্তারিত ভাবে বিজ্ঞানের পথে পদচারণা করি তাতে, এই বিশ্বব্রহ্মান্ডের মহাশূন্যে শত -শত গ্যালাক্সি অবস্থান করছে । এক - একটি গ্যালাক্সি হাজার হাজার নক্ষত্র দ্বারা গঠিত । এই হাজার- হাজার নক্ষত্র গুলিকে কেন্দ্র করে লক্ষ লক্ষ গ্রহ - উপগ্রহ অবিরাম ভাবে পরিক্রম করে চলেছে । এই রকমই মিক্লিওয়ে গ্যালাক্সির , সূর্য নামক নক্ষত্রকে কেন্দ্র করে নির্দিষ্ট কক্ষপথে আমাদের পৃথিবী প্রতি সেকেন্ডে তিরিশ কিমি গতিবেগে অবিরাম ভাবে ঘুরছে । এই রকম এক পরিস্থিতিতে পৃথিবীতে আনুমানিক প্রায় সাড়ে ছয় কোটি বছর পূর্বে ডাইনোসরাস নামে বিশাল আকৃতির প্রানীরা বসবাস করতো । বিজ্ঞানীদের ধারণা অনুযায়ী সেই সময় হঠাৎ একটি বিশাল আকৃতির একটি উল্কাপিন্ড, পৃথিবীর বুকে জোরালো আঘাত করলে , জলোচ্ছ্বাস সহ ধুলিঝড়ের মহাপ্রলয় সৃষ্টি হয়। এতে করে সমগ্র পৃথিবীর প্রকৃতিক পরিবেশ সম্পূর্ণ ভাবে নষ্ট হয়ে যায় এবং পৃথিবীর বুকে একচ্ছত্র রাজত্ব করতে থাকা ডাইনেসরা সব অবলুপ্ত হয়ে যায় । অথচ সেই সময় পৃথিবীর বুকে ইঁদুরের মতো ছোট্ট ও গর্তে বাস করা লেমন নামের স্তন্যপায়ী প্রাণীরা বেঁচে যায় । জলাভূমিতে জলচ্ছ্বাস , স্থলভূমিতে ধুলিঝড়ের দীর্ঘদিন পর প্রকৃতিক পরিবেশ মোটামুটি স্থির হলে , এই স্তন্যপায়ী প্রাণীরা খাদ্যের সন্ধানে অতি সহজে বেরিয়ে আসে এবং নির্ভয়ে পৃথিবীর বুকে বিচরণ করতে থাকে । এরাই ক্রমে -ক্রমে আকারে বিকশিত হতে- হতে প্রোটোপাইমাস প্রানীতে পরিনত হয় । প্রোটোপাইমাস প্রানীরা অভিযোজিত হয়ে বানরে রুপান্তরিত হয় । এই বানরদের স্পাইনালকড ব্রেনের সঙ্গে যুক্ত হয়ে মস্তিষ্কের পশ্চাত্ থেকে সম্মুখপানে আসতে থাকে । এই সময় সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ঘটনা হল দক্ষিণ আফ্রিকার পর্বত বেষ্টিত এলাকা মৌসুমী জলবায়ু হওয়া সত্ত্বেও সময়ের সাথে- সাথে খরা দেখা দিলে , এরা খাদ্য ও বাসস্থানের সন্ধানে বেরিয়ে পড়ে । আর এরাই ক্রমপর্যায়ে ড্রায়োপিথেকাস ও রামপিথেকাস পরিবর্তন হতে- হতে দীর্ঘ সময়ের ব্যবধানে অস্টালোপিথেকাস পরিবর্তন হয়ে যায়। এই অস্ট্রালোপিথেকাস একে- অপরের সাথে নানা ধরনের শব্দের মাধ্যমে মত বিনিময় করতে পারতো , পশু শিকার করে কাঁচা মাংস খেত , এরা কোন রকমে দাঁড়াতে শিখেছিল । আর পরবর্তীকালে খাদ্য ও বাসস্থানের উদ্দেশে সমগ্র এশিয়া, ইউরোপে ছড়িয়ে পড়ে । এই অস্ট্রালোপিথেকাস থেকে বিবর্তিত হয়ে পিথেক্যানথ্রোপাসে সৃষ্টি হয় , এরা গুহায় বাস করতে বেশী পছন্দ করতো , হাতিয়ার তৈরি ও ব্যবহার করতে শিখেছিল , প্রথম আগুনের ব্যাবহার শিখে , নিজেদের মধ্যে মত বিনিময় করতে জানতো ।
এই পিথেক্যানথ্রোপাস ধীরে ধীরে নিয়ানডার্থাল বা হোমোস্যাপিয়েন্সে অভিযোজন হয় , এরা মাংস পুড়িয়ে খেতে শিখে , পশুর চামড়ার পোশাক পরতে শিখে । এই এরাই প্রথম মানুষ , অর্থাৎ আজকের আধুনিক মানব সভ্যতার পূর্ব প্রজাতি । এই ভাবে ক্রম- ক্রমে বিবর্তন বা অভিযোজনের মধ্যে দিয়ে ছোট স্তন্যপায়ী প্রানী থেকে হমোসেপিয়ানসের মধ্যে দিয়ে আজকের আধুনিক মানুষ । এটাই হলো সর্বপেক্ষা গ্রহণ যোগ্য মতবাদ ।
তবে দ্বিতীয় মতবাদটিও ফেলে দেওয়ার মত নয় । বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিকে অবলম্বন করে চিন্তাশীল বিজ্ঞানীরা এলিয়েন মতবাদটি প্রতিষ্ঠা করার আপ্রান চেষ্টা করে চলেছে । তাদের মতে এলিয়েন অর্থাৎ অন্য গ্রহের জীব এই পৃথিবীতে এসেছিল , তারাই আদিম মানুষকে আধুনিক মানুষে রুপান্তরিত করেছে । বিজ্ঞানী Erich von Daniken তিনি তার Chariots fo the Gods গ্রন্থে বলেছেন যে, বিজ্ঞানের অগ্রগতিকে পাথেও করে আমরা যেমন বিমান ব্যবহার করে এক জায়গায় থেকে অন্য জায়গায় বা একদেশ থেকে অন্য দেশে পৌঁছে যাচ্ছি । তেমন মহাকাশ যান ও রকেট ব্যবহার করে একটি গ্রহ থেকে অন্য গ্রহে পৌঁছে যাচ্ছি । সাথে- সাথে ইলেকট্রনিক, নেট, কম্পিউটার, পরমানু অস্ত্র , হাইড্রোজেন বোম, স্যাটেলাইট, লেজার অস্ত্র, সাফল্যের সাথে অঙ্গ প্রতিস্থাপন সুসম্পন্ন করছি ।
এমতাবস্থায় আমাদের পৃথিবী থেকে যদি কয়েক জন বিজ্ঞানী , একটি মহাকাশযানে করে এমন কোন গ্রহে অবতরণ করে , যেখানে মানুষেরা এখনো আদিম বা প্রস্তর যুগে বাস করছে । তাহলে দেখা যাবে পৃথিবী থেকে ওই গ্রহে অবতরণ করা এই সমস্ত বিজ্ঞানীরা নিজেদের জ্ঞান বুদ্ধি দিয়ে তাদের কাজকর্মকে নানা ভাবে প্রভাবিত করবে । এই সকল বিজ্ঞানীদের চিন্তা ভাবনা, আধুনিকতা, সংস্কৃতি, মানবীকতা ও বিজ্ঞানমনস্কতা তাদের কাছে পরম পাওয়া হবে । এবং বিজ্ঞানীরা তাদেরকে সর্বাত্মকভাবে আধুনিক মানুষে রুপান্তরিত করার চেষ্টা করবে । তারপর বিজ্ঞানীদের সময়মত তারা যদি পুনরায় পৃথিবীতে ফিরে আসে, এবং আসার সময় আশ্বাস দিয়ে আসে যে সময়ে অসময়ে প্রার্থনা করলে , তারা আবার এই গ্রহে উপস্থিত হবে । তবে হ্যাঁ তোমাদের প্রার্থনায় আমাদের সন্তুষ্ট করতে হবে , তাহলে এই বিজ্ঞানীদের উপস্থিতি তারা দেবতা বলে মনে করবে, এবং আমাদের এই পৃথিবী থেকে ওই গ্রহে যাওয়ার জন্য আমাদের এই পৃথিবীকে তারা স্বর্গ বলে মনে করবে। ঠিক যেমন করে অন্য গ্রহ থেকে আসা গ্রহের মানুষকে দেবতা ও অন্য গ্রহকে স্বর্গ বলে আমরা মনে করি । সব সময় অনুভব করি যেন আমাদের পৃথিবীতে স্বর্গ থেকে দেবতা এসেছিল । আসলে তারা অন্য গ্রহের উন্নত সমাজজীবন পালন করা বিজ্ঞানমনস্কতা আধুনিক মানুষ। সবচেয়ে আধুনিক মানুষের জন্য অমর্যাদাকর কথা কি জানো আলাপন ।
---কি স্যার ।
--- আজ পৃথিবীর আধুনিক মানুষ যে , বিজ্ঞানের সাফল্য , বিজ্ঞানের সাফল্য বলে চিৎকার করছে , আসলে তা এলিয়েনদের দেখানো পথে অনুসন্ধান মুলক এগিয়ে চলা মাত্র । এর চেয়ে আর বেশি কিছু নয় ।
আলাপন এতদিন পাঠ্যপুস্তক ও বড়দের নিকট থেকে অনেক গল্প শুনলেও এই ধরনের গল্প কখনো শুনেনি , তাই রামকিঙ্কর বাবুর মুখের দিকে অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকতে থাকতে বলল ,
--- স্যার আপনার এই কথা শুনে আমার একটা কথা মনে পড়ে যাচ্ছে , বলবো ।
--- নিশ্চয়ই বলবে , কেন বলবে না ! ভুমি থেকে কয়েক হাজার ফুট উচ্চতায় বিজ্ঞানের আশির্বাদের উপর বসে , বিজ্ঞান নিয়েই আলোচনা করতে কার -না ভালোলাগে বলো । বলো আলাপন কি বলবে --- বলো ।
--- কয়েক মাস আগে আমি একটি জার্নালে পড়েছিলাম , " Human are not from Erath" গ্রন্থে বিজ্ঞানী ডাঃ এলেস সিলভার বলেছেন যে , -- মানুষ পৃথিবীর জলবায়ুতে ক্ষাপছাড়া বা বেমানান একটি জীব । তিনি সরাসরি বলেছেন মানুষ অন্য গ্রহ থেকে আমাদের এই পৃথিবীতে এসেছে ।
আসলে মানুষ পৃথিবীর থেকে হয়তো কম তাপ আলো যুক্ত ভিন্ন কোন গ্রহে বাস করতো । তিনি তার বক্তব্যের সমর্থনে অনেক গুলি বেশ মুক্তিপণ কথা বলেছেন । তেমন বলেছেন মানুষ দীর্ঘক্ষণ বৃষ্টিতে ভিজলে সর্দি কাশি জ্বর হয় , দীর্ঘক্ষণ রোদে থাকলে স্নানস্ট্রোক হয় অথচ মানুষ ব্যাতীত এই পৃথিবীতেই বাস করা অন্য সকল প্রানীর সর্দিকাশি বা স্নানস্টোক হয় কি ? মানুষের জন্ম গ্রহনের সময় সদ্যজাত ও মা দুই জনকেই অধিক কষ্ট যন্ত্রনা সহ্য করতে হয়, আবার অনেক সময় সদ্যজাত ও মায়ের প্রান হানীর সম্ভবনা থেকেই যায় , অন্যদিকে মানুষ ছাড়া পৃথিবীর অন্য কোন প্রানীর ক্ষেত্রে এই রকম ঘটনা দেখা যায় না। অনান্য প্রানীর সদ্যজাতরা জন্ম গ্রহণের পরই হাঁটা শুরু করতে পারে কিন্তু মানুষকে হাঁটা অধিক অভ্যাসের দ্বারা রপ্ত করতে হয় । বর্তমানে পৃথিবীর অধিকাংশ মানুষ ব্যাকপেনে ভুগছেন, অথচ মানুষ ছাড়া অন্য কোন প্রানীকে ব্যাকপেন রোগে ভুগতে হয় না । কারন হিসাবে তিনি উল্লেখ করেছেন , মানুষ যখন দাঁড়িয়ে থাকে তখন পৃথিবীর অতিরিক্ত মাধ্যাকর্ষন চাপ মানুষের উপর সৃষ্টি করে , অথচ অন্য কোন প্রানীদের ক্ষেত্রে সেটা হয় না । তিনি এও বলেছেন যে শুধুমাত্র মানুষকেই এই পৃথিবীর বুকে বেঁচে থাকার জন্য অনেক ধরনের পথ অবলম্বন করতে হয় , যেটা অন্য কোন প্রানীদের হয় না ।
রামকিঙ্কর বাবু জানতেন যে আলাপন মহাকাশ ও আধুনিক মানব সভ্যতার ইতিহাস নিয়ে খোঁজখবর রাখে , তাবলে তার থেকে ডঃ এলেস সিলভার মতবাদ শুনতে পাবেন একবারের জন্যও ভাবেন নি , তাই তিনি চাওয়ার থেকেও বেশি কিছু পাওয়ায় আশ্চার্যান্বিত হয়ে বললেন
--- ঠিক বলেছো আলাপন । তবে কি জানো মানব সভ্যতার ইতিহাস সম্পর্কে আমার ধারণা যে, সমগ্র বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের পৃথিবীর মত হাজার হাজার গ্রহ গ্রহাণু ঘুরে বেড়াচ্ছে ।
যেখানে কোন কোন গ্রহে প্রানের অস্তিত্ব আছে । এমনকি তারা মানুষের চেয়ে অধিক বা কম আধুনিক গুন সম্পন্ন , মানুষের আকৃতির ন্যায় অথবা বিকৃত । বিজ্ঞানীদের ন্যায় আমিও বিবর্তন বাদকে সমর্থন করি তবে তা প্রস্তর যুগ পর্যন্ত । অর্থাৎ আমার ধারনা খ্রীষ্টপূর্ব সাড়ে সাত হাজার বছর পূর্ব থেকে খ্রীষ্টপূর্ব চার হাজার বছর পর্যন্ত , এই সময়কালে মধ্যেই অন্য গ্রহের প্রাণী , বা মানুষ আমাদের এই পৃথিবীতে এসেছিল। তখন পৃথিবীতে চলছে প্রস্তর যুগ মানুষ হাতিয়ারের ব্যবহার শিখেছে , লিখতে শিখেছে , গোষ্ঠীবদ্ধ ভাবে বাস করতে শিখেছে । এমতাবস্থায় সম্ভবত ভারতবর্ষে , রাশিয়ান বিজ্ঞানীদের অনুমান অনুযায়ী ওয়ান সিবিলাইজেশানের আধুনিক জ্ঞান বিজ্ঞান সম্পন্ন তেত্রিশ জন ভীন্নগ্রহী এলেন , যাদের আমরা তেত্রিশ কোটি দেবতা রূপে গণ্য করি । তারা মনে মনে চিন্তা করেই একস্থান থেকে অন্য স্থানে যেতে পারত , নিজে নিজেই ইচ্ছাকৃত রূপ পরিবর্তন করতে পারত , এমনকি প্রয়োজনে অঙ্গ প্রতিস্থাপন করতে পারতো । এই ভিন্নগ্রহীরা সমসময়ে পৃথিবীর বুকে যে সকল সভ্যতা গড়ে উঠতে ছিল, সেখানেই তাদের বিচরণ ছিল। তবে তারা এক একজন , এক একটি বিষয়ে বিশারদ ছিল । তাদের প্রকৃতির উপর ধ্যান ধারণায় ও বিষয়গত দক্ষতা তৎকালীন দিনের মানুষকে অবিভূত করে তুলেছিল । তাই আপদে বিপদে মানুষ তাদের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছিল , ফলে তাদের সন্তুষ্ট রাখার জন্য নানা ধরনের আয়োজন করতো । হঠাৎ এক সময় ভিনগ্রহীরা , তৎকালীন সহজ সরল মানুষকে আপদে বিপদে পড়ে অনুসরন করলে পুনরায় সাহায্য করতে আসার আস্বাস দিয়ে, নিজেদের গ্রহে ফিরে যায় । তারপর থেকে পৃথিবীর মানুষ তাদের দেবতা জ্ঞানে পূজা করে আসছে । এ ব্যাপারে তুমি কি কি যুক্তি উপস্থাপন করবে ।
আলাপন কিছুক্ষণ চোখবুজে , মাথা চুলকাতে চুলকাতে বলল , --- স্যার এলিয়েনরা এসে ফিরে গিয়েছে হতে পারে , না হওয়ার কিছু নেই । তাছাড়া এও হতে পারে স্যার, আমরা সকলেই জানি যে এই মহাবিশ্বে পৃথিবী সুর্যের ন্যায়, কত নক্ষত্রকে অবলম্বন করে কত গ্রহ গ্রহাণু নির্দিষ্ট কক্ষপথে অবিরাম প্রদক্ষিণ করে চলেছে । আবার কত গ্রহ বা নক্ষত্র ঘুরতে- ঘুরতে পৃথিবীর পাশাপাশি উপস্থিত হয়ে কিছুদিন পাশাপাশি থাকার পর, পুনরায় গতির ব্যবধানে অনেক দূরে চলে গিয়েছে । একশ -পাঁচশ বা লক্ষ বছরের মধ্যে তারা পুনরায় পৃথিবীর পাশাপশি আসতেও পারে , আবার নাও আসতে পারে । যেমন হ্যালির ধুমকেতু পঁচাত্তর বছরের ব্যবধানে পৃথিবীর পাশাপাশি আসে । অনুরূপ ভাবে পৃথিবীর পাশাপাশি এমন কোন গ্রহ উপস্থিত হয়েছিল, যার অধিবাসীরা হয়তো সিবিলাইজেশন ওয়ান বা টু'য়ে জীবনযাপন করা মানুষ । যাদের আমরা দেবতা বলি, যাদের বাসস্থানকে স্বর্গ বলে আক্ষায়িত করেছি। হয়তো তাদের গ্রহ বেশ কয়েক দশক পৃথিবীর পাশাপাশি ছিল , তারপর তারা অনেক দুরে হারিয়ে গিয়েছে । তারা পৃথিবীতে আসতে পারতো , এবং পৃথিবীর কিছু মানুষ স্বর্গেও যেতে পারতো ।
এই দেখুন না স্যার , আমরা রামায়নে পড়েছি স্বর্গের অধিকার নিয়ে দেবতা অসুরদের যুদ্ধে , রাজা দশরথ দেবতাদের পক্ষে যুদ্ধ করতে স্বর্গে গিয়েছিলেন এবং যুদ্ধ পরবর্তী ক্লান্ত দশরথের সেবা করে রানী কৈকেয়ী দুটি বর চেয়েছিলেন । এক বরে জ্যেষ্ঠপুত্র রাম চোদ্দ বছরের জন্য বনবাসে যাবে , দ্বিতীয় বরে কৈকেয়ীর ছেলে ভরত রাজা হবেন । আবার মহাকবি কালীদাসের অভিজ্ঞান - শকুন্তলম্ কাব্যগ্রন্থে রাজা দুষ্মন্ত দেবতাদের পক্ষে যুদ্ধ করে যখন ফিরছিলেন, তখন তিনি হঠাৎ লক্ষ্য করলেন তপবনে একটি সিংহ শিশু মানব শিশুর সাথে খেলা করছে । মহাভারতে কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধের পর দূর্যধন সহ পান্ডবদের স্বর্গে যাওয়ার বর্ননা আছে । যদি স্বর্গ বলে কিছু নাই থাকত তাহলে বেদ, রামায়ণ, মহাভারত, কোরআন, বাইবেল সহ পৃথিবীর সমস্ত ধর্মগ্রন্থে , স্বর্গ স্বরূপ অমৃতলোকে যাওয়াই শেষ পরিণতি বলতো কেন ? কেনই বা সকলেই আকাশের দিকে তাকিয়ে স্বর্গের অবস্থান নির্দেশ করবে । আসলে হয়তো তৎকালীন মানুষ এমন একটি গ্রহের সন্ধান পেয়েছিল যেখানে যাওয়া যেত , সেখান থেকে সহজেই পৃথিবীতে আসতে পারতো । সেখানকার মানুষের জীবনযাত্রা আজকের আধুনিক পৃথিবীর থেকে কয়েক গুন আধুনিক ছিল ।
--- তোমার কথায় সহমত পোষণ না করে পারলাম না , আলাপন । তবে আমার ধারণা এলিয়েনরা ভারতীয় উপমহাদেশেই এসেছিল । কারন মতান্তরে পৃথিবীর সমস্ত ভাষার উৎপত্তি যদি সংস্কৃত ভাষা থেকে হয়ে থাকে , তাহলে বলতেই পারি সংস্কৃত ভাষাই হল আদি ভাষা । এবার যখন ভিন-গ্রহীরা পৃথিবীতে এলো তখন পৃথিবীর মানুষ নানা ধরনের আকার - ইঙ্গিত ও এলোমেলো শব্দের মাধ্যমে ভাব বিনিময় করতো , আর এলিয়েন বা দেবতারা পরিপুষ্ট সংস্কৃত ভাষায় কথা বলতে থাকলে , তাদের থেকেই পৃথিবীর মানুষ ভাষা শিখেছে । রামায়ণ মহাভারত থেকে শুরু করে ভারতীয় উপমহাদেশের অতীতের অধিকাংশ গ্রন্থই সংস্কৃত ভাষায় লেখা । অনেক ধর্মগ্রন্থে বর্নিত রয়েছে দেবতারা হিমালয়ে বাস করত আর শিব কৈলাসে স্বপরিবারে বাস করত । এখান থেকেই অনুমান করতে পারি দেবতা বা এলিয়েনরা ভারতীয় উপমহাদেশেই এসেছিল । তাদের উপস্থিতি যারা লিখতে পেরেছে তারা গাছের ছালে, পশুর চামড়ায় , পাথরে লিখে রেখেছে । আর যারা আঁকতে পেরেছে তারা গুহার দেয়ালে , পাথরের গায়ে খোদাই করে এঁকে রেখেছে , আর বেশির ভাগ অংশটাই মুখে মুখে শ্রুতি হয়ে রয়েছে । আচ্ছা আলাপন আমি তো এতগুলি কথা বললাম এবার তুমি কেন বলছো আধুনিক প্রযুক্তি ধার করা ?
--- একথা বলার কারন স্যার অনেক , রামায়ণে উল্লেখিত রাবনের পুষ্পরথ কনসেপ্ট থেকে আজকের উড়োজাহাজ , মহাভারতে সঞ্জয়ের কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধ দর্শন থেকে আজকের টিভি । গনেশের মাথায় হাতির মাথা, দক্ষের মাথায় ছাগলের মাথা পরিবর্তন থেকে আজকের অঙ্গ প্রতিস্থাপন । দেবতাদের ত্রিনয়ন বা হাতের তীব্র আলোকরশ্মি দ্বারা অপরাধীদের ভষ্ম করে দেওয়া থেকে আজকের লেজার অস্ত্র , মহাভারতে কুন্তির ইচ্ছাকৃত সন্তান লাভ থেকে আজকে আইভিএফ , সিঙ্গেলমাদার , মায়া সম্রাট প্যাকালের চিত্র থেকে মহাকাশচারীর চিন্তা ভাবনার কথা বলতেই পারি । বেদ, উপনিষদ, রামায়ণ, মহাভারতের লাইনে- লাইনে আধুনিক প্রযুক্তি ও বিজ্ঞানকে উৎসাহ দান করে,এটা বলতেই পারি ।
এই ভাবে একের পর এক প্রশ্ন উত্তরের মাঝে আলাপন ও রামকিঙ্কর স্যারের দীর্ঘ বিমান যাত্রার অবসান ঘটিয়ে , আলাপন এয়ারপোর্ট থেকে বেরিয়ে নিজের মোবাইল সচল করতেই লক্ষ্য করে বাবার নাম্বার থেকে কল করতে চেয়ে বেশ কয়েকটি ম্যাসেজ । তাই দেখে আলাপন ইতঃস্তত বোধ করে তড়িঘড়ি বাবার নাম্বারে কল করে বলে ,
---- হ্যালো বাবা কিছু বলতে চেয়েছিলে ? কল করেছিলে কেন ?
--- হ্যাঁ'রে কখন পৌঁচ্ছালি বাবা ।
--- এই 'তো সবেমাত্র ।
--- কোন অসুবিধা হয়নি তো ! উড়োজাহাজের আমার বাপ-চোদ্দ পুরুষ চড়েনি , সেই জন্য বুকটা ভয় ভয় করছিল ।
--- ভয়- টয় হয়নি বাবা,খুব আনন্দ হচ্ছিল ।
--- আসলে আমাদের বংশের তো অনেক দুরের কথা , এখনো আমাদের পাড়ার কেউ উড়োজাহাজে চড়েনি । আসলে কি বলতো বাবা , পাড়ার তোকে যা সব উল্টোপাল্টা বলে, সেই জন্যই মনটা খুঁত -খুঁত করছিল । ও হ্যাঁ দেখছিস কথায় কথায় আসল কথাটাই বলতে ভুলে গিয়েছিলাম ।
--- বাবা কি আসল কথা ।
--- বলছি আজ দুপুরে বাড়িতে পিওন এসে একটি চিঠি দিয়ে গিয়েছে ।
--- কিসের চিঠি ?
--- টাটা ইন্সটিটিউট অফ ফান্ডামেন্টাল রিসার্চ স্কলার হিসাবে জয়েন করার জন্য , তোর নামে লেটার এসেছে আলাপন ।
--- তুমি এখনি ওটা নিয়ে , আমাদের গলির রামু'দার কম্পিউটার সেন্টার থেকে আমাকে মেল করে দাও , ওর নিকট আমার মেল আইডি আছে । ওখানে পৌঁছে আমাকে কল করবে, দাদাকে আমি বিস্তারিত বলে দেবো । আমি এখন মুম্বাইতেই আছি , স্যারকে সাথে নিয়ে ওখানে জয়েন্ট করে নেবো চিন্তা করতে হবে না ।
--- ও আবার লোককে জানিয়ে দেবে না'তো ।
--- এটা মনে রাখবে বাবা , পাড়ার লোকের কাজ হলো কোন কিছু রটানো , সেটা ভালো হোক বা মন্দ হোক । তোমার কানা খোঁড়া ছেলের , কোনো কিছু রটানোয় তোমার যেমন দুঃখ লাগতো বাবা , ঠিক তেমনি তোমার সেই কানা খোঁড়া ছেলের নামে এবার কোন কিছু রটলে, আনন্দে আমার সাথে তোমার বুকটাও ভরে যাবে বাবা ।
গল্পকার -- রাজীব রং
তারিখ -- ৩১/১০/২০২১
************ সমাপ্ত ************
Tags
Literature