সোনিয়া গান্ধী রাজ্যসভায়, লোকসভা ছেড়ে কেন?

নয়াদিল্লি: দীর্ঘদিন ধরে ভারতীয় রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দুতে থাকা সোনিয়া গান্ধী লোকসভা ছেড়ে রাজ্যসভায় যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে তিনি আমেঠি বা রায়বেরেলি থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা না করে রাজস্থান থেকে রাজ্যসভার আসনের জন্য মনোনয়ন জমা দিয়েছেন।


কেন এই সিদ্ধান্ত?

এই সিদ্ধান্তের পেছনে বেশ কিছু কারণ থাকতে পারে।

বয়স ও স্বাস্থ্য: ৭৭ বছর বয়সী সোনিয়া গান্ধী গত কয়েক বছর ধরে স্বাস্থ্য সমস্যায় ভুগছেন। লোকসভা নির্বাচনে প্রচারণার কঠিন পরিশ্রম এড়াতে তিনি রাজ্যসভায় যেতে চাইছেন বলে মনে করা হচ্ছে।

 পরাজয়ের আশঙ্কা: ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির স্মৃতি ইরানির কাছে আমেঠি থেকে পরাজিত হয়েছিলেন সোনিয়া গান্ধী। এবারও তার জয়ের সম্ভাবনা কম বলে মনে করা হচ্ছে।

 পরিবারের ভবিষ্যৎ: সোনিয়া গান্ধী হয়তো তার ছেলে রাহুল গান্ধী বা বড়নাতি প্রিয়াঙ্কা গান্ধী ভাদ্রাকে রাজনীতিতে আরও  সুযোগ করে দিতে চান।

কংগ্রেসের প্রভাব:

সোনিয়া গান্ধীর লোকসভা ছেড়ে যাওয়া কংগ্রেসের জন্য একটি বড় ধাক্কা। তিনি দলের অন্যতম জনপ্রিয় ও প্রভাবশালী নেত্রী। তার অনুপস্থিতি দলের ভোট সংগ্রহে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

বিরোধীদের প্রতিক্রিয়া:

বিরোধী দলগুলি সোনিয়া গান্ধীর সিদ্ধান্তকে 'পরাজয়ের স্বীকারোক্তি' হিসেবে ব্যাখ্যা করেছে। তারা বলছে, তিনি লোকের মুখোমুখি হতে ভয় পাচ্ছেন।

ভবিষ্যতের সম্ভাবনা:সোনিয়া গান্ধী রাজনীতি থেকে সম্পূর্ণ অবসর নেবেন না বলে মনে করা হচ্ছে। তিনি রাজ্যসভায় দলের নেত্রী হিসেবে কাজ চালিয়ে যাবেন।

রাজ্যসভা নির্বাচন: কংগ্রেস কর্ণাটক থেকে অজয় ​​মাকেন, তেলেঙ্গানা থেকে রেণুকা চৌধুরী এবং মহারাষ্ট্র থেকে চন্দ্রকান্ত হান্দোরকে রাজ্যসভার জন্য মনোনীত করেছে।

 হাইকোর্টের জমি: সুপ্রিম কোর্ট দিল্লির রাউজ অ্যাভিনিউতে অবস্থিত আম আদমি পার্টির অফিসের জমি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। বেঞ্চ বলেছে এই জমি যাতে সাধারণ নাগরিকদের জন্য ব্যবহার করতে পারে সেজন্য হাইকোর্টে ফেরত দিতে হবে।

এই সিদ্ধান্তের দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব কী হবে তা সময়ই বলে দেবে। তবে, এটি ভারতীয় রাজনীতিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড়।

সোনিয়া গান্ধী লোকসভা ছেড়ে যাওয়ায় কংগ্রেসের উপর বেশ কিছু প্রভাব পড়তে পারে:

 দলের ভোট সংগ্রহে নেতিবাচক প্রভাব: সোনিয়া গান্ধী দলের অন্যতম জনপ্রিয় ও প্রভাবশালী নেত্রী। তার অনুপস্থিতি দলের ভোট সংগ্রহে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

 নেতৃত্বের সংকট: সোনিয়া গান্ধীর পর দলে কে নেতৃত্ব দেবেন তা স্পষ্ট নয়। রাহুল গান্ধী বা প্রিয়াঙ্কা গান্ধী ভাদ্রা নেতৃত্বের দায়িত্ব নিতে পারেনতবে তাদের অভিজ্ঞতা ও জনপ্রিয়তা সোনিয়া গান্ধীর মতো নয়।

 আভ্যন্তরীণ কোন্দল: নেতৃত্বের সংকট দলের মধ্যে আভ্যন্তরীণ কোন্দল বৃদ্ধি করতে পারে।

অন্যদিকে, এই সিদ্ধান্তের কিছু ইতিবাচক প্রভাবও হতে পারে:

 নতুন নেতৃত্বের উত্থান: সোনিয়া গান্ধীর অনুপস্থিতি দলে নতুন নেতৃত্বের উত্থানের সুযোগ করে দিতে পারে।

 পরিবর্তনের বার্তা: এই সিদ্ধান্ত দলের মধ্যে পরিবর্তনের বার্তা দিতে পারেযা ভোটারদের কাছে ইতিবাচকভাবে কাজ করতে পারে।

এই সিদ্ধান্তের দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব কী হবে তা নির্ভর করবে কংগ্রেস কীভাবে এই পরিবর্তনের সাথে মানিয়ে নিতে পারে তার উপর।

ভারতীয় রাজনীতি একটি গতিশীল প্রক্রিয়া। এই সব ঘটনার ফলে ভবিষ্যতে কী হবে তা বলা কঠিন।

Shyamal Kumar Rong

আমি মনসুকা খবরের সাংবাদিক। খবর, ভিডিও, তথ্য, গল্প পাঠাতে যোগাযোগ করুন। ফোন/হোয়াটসঅ্যাপ ৯৭৭৫৭৩২৫২৫.

নবীনতর পূর্বতন

বিজ্ঞাপন

Mansuka khabar

বিজ্ঞাপন

Mansuka khabar
Mansuka khabar