মস্কো, ১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ - প্রায় দুই বছর আগে, ইউক্রেনে আগ্রাসন শুরু করার পর রাশিয়ার উপর পশ্চিমা দেশগুলো অভূতপূর্ব অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল। অনেকে ভেবেছিলেন, এই নিষেধাজ্ঞা রাশিয়ার অর্থনীতিকে ধ্বংস করে দেবে। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয়, রাশিয়ার অর্থনীতি টিকে আছে, বরং জি-৭ দেশগুলোকে ছাড়িয়ে গেছে!
রাশিয়ার অর্থনীতির অভাবনীয় প্রবৃদ্ধি
গত সপ্তাহে, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) রাশিয়ার অর্থনীতির প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস 1.1 শতাংশ থেকে 2.6 শতাংশে বাড়িয়েছে। এটি রাশিয়ার অর্থনীতির শক্তির প্রমাণ।
কিভাবে সম্ভব হলো?
যুদ্ধ অর্থনীতি: রাশিয়া তার অর্থনীতিকে একটি গতিশীল যুদ্ধ অর্থনীতিতে রূপান্তরিত করেছে। সরকারের বাজেটের ৪০ শতাংশ ব্যয় হচ্ছে সেনাবাহিনী ও নিরাপত্তা খাতে।
তেল ও গ্যাসের উপর নির্ভরতা: রাশিয়ার তেল ও গ্যাসের উপর পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও, হাইড্রোকার্বন পণ্য বিক্রি থেকে রাজস্ব এখনও রাশিয়ান কোষাগার পূরণ করছে।
চীনের সাথে সম্পর্ক: রাশিয়া চীনের সাথে তার বাণিজ্যিক সম্পর্ক জোরদার করেছে।
অভ্যন্তরীণ উৎপাদন বৃদ্ধি: রাশিয়া গোপনে শত শত ট্যাঙ্কার কিনেছে এবং মোতায়েনও করেছে।
মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ: রাশিয়া মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সক্ষম হয়েছে।
রাশিয়ার অর্থনীতির ভবিষ্যৎ
রাশিয়ার অর্থনীতির এই প্রবৃদ্ধি কতদিন ধরে রাখতে পারবে? এটি একটি বড় প্রশ্ন।
তেলের বাজার: তেলের বাজারে যদি কোন পরিবর্তন আসে, রাশিয়ার অর্থনীতিতে প্রভাব পড়বে।
পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা: পশ্চিমা দেশগুলো যদি নিষেধাজ্ঞা আরও তীব্র করে, রাশিয়ার অর্থনীতিতে চাপ পড়বে।
যুদ্ধের দীর্ঘায়ন: যুদ্ধ যদি দীর্ঘায়িত হয়, রাশিয়ার অর্থনীতির উপর চাপ বাড়বে।
হিমায়িত সম্পদের ভাগ্য
পশ্চিমা দেশগুলো রাশিয়ার 300 বিলিয়ন ডলার সম্পদ হিমায়িত করেছে। এই সম্পদের ভাগ্য নিয়ে বিতর্ক চলছে।
ইউক্রেনের পুনর্গঠনের জন্য ব্যবহার: ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি হিমায়িত সম্পদের বিষয়ে বলেছেন, "এই অর্থ ইউক্রেনের জনগণের।" তিনি দাবি করেছেন যে, রাশিয়া যুদ্ধের জন্য ক্ষতিপূরণ হিসেবে এই অর্থ ব্যবহার করা উচিত।
বিশ্লেষকদের মতামত
বিশ্লেষকরা মনে করেন, রাশিয়ার অর্থনীতির এই প্রবৃদ্ধি স্থায়ী হবে না। তাদের মতে, যুদ্ধের দীর্ঘায়ন এবং পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা রাশিয়ার অর্থনীতিতে চাপ সৃষ্টি করবে।