টেলর সুইফটের সাফল্যের গল্প: বিশ্বের শীর্ষ ধনীদের তালিকায় নতুন সংযোজন

কোলকাতা, ৩১ জুলাই, ২০২৪: সংগীত জগতের অন্যতম উজ্জ্বল তারকা, টেলর সুইফট, সম্প্রতি ফোর্বসের বিশ্বের শীর্ষ ধনীদের তালিকায় প্রবেশ করেছেন। তাঁর কেরিয়ারের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত দীর্ঘ পথ চলার মধ্যে দিয়ে তিনি নিজেকে শুধু একজন সঙ্গীত শিল্পী হিসেবে নয়, একজন সফল ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। কিভাবে টেলর সুইফট এই বিশাল সম্পত্তির মালিক হলেন এবং বর্তমানে বিশ্বের শীর্ষ ধনীদের তালিকার প্রথম দশ জন কারা, তা নিয়ে আলোচনা করা হবে।


 টেলর সুইফটের সাফল্যের যাত্রা

টেলর সুইফটের সঙ্গীত কেরিয়ার শুরু হয়েছিল খুবই অল্প বয়সে। তাঁর প্রথম অ্যালবাম, "টেলর সুইফট", ২০০৬ সালে মুক্তি পায় এবং দ্রুতই তিনি একটি পরিচিত মুখ হয়ে ওঠেন। পরবর্তী বছরগুলোতে, "ফিয়ারলেস", "রেড", "১৯৮৯", এবং "রেপুটেশন" এর মতো অ্যালবামগুলি তাঁকে সঙ্গীত জগতের শীর্ষে নিয়ে যায়।

 ১. অ্যালবাম বিক্রি ও স্ট্রিমিং রাজস্ব

টেলর সুইফটের প্রধান আয়ের উৎস হল তাঁর অ্যালবাম বিক্রি এবং ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে স্ট্রিমিং থেকে আসা রাজস্ব। তাঁর বেশিরভাগ অ্যালবাম বেস্টসেলার হয়েছে এবং বিশ্বজুড়ে কোটি কোটি কপি বিক্রি হয়েছে।


 ২. লাইভ কনসার্ট ও ট্যুরিং

টেলর সুইফটের কনসার্ট ট্যুরগুলি তাঁকে বিশাল আয়ের উৎস দিয়েছে। তাঁর "১৯৮৯" এবং "রেপুটেশন স্টেডিয়াম ট্যুর" পৃথিবীজুড়ে লক্ষ লক্ষ ভক্তের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত হয়েছিল এবং টিকেট বিক্রি থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ উপার্জন হয়েছে।

 ৩. বাণিজ্যিক চুক্তি ও বিজ্ঞাপন

তিনি অ্যাপল, ডায়েট কোক, এবং কেডসের মতো বড় ব্র্যান্ডের সঙ্গে বাণিজ্যিক চুক্তি করেছেন, যা তাঁর আয়কে আরও বৃদ্ধি করেছে। এছাড়াও, সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে তাঁর বিপুল ফলোয়ারের জন্যও বিভিন্ন ব্র্যান্ডের সঙ্গে বিজ্ঞাপন চুক্তি করেছেন।

৪. বুদ্ধিদীপ্ত বিনিয়োগ

টেলর সুইফট তাঁর উপার্জিত অর্থকে বুদ্ধিদীপ্তভাবে বিনিয়োগ করেছেন। বিভিন্ন রিয়েল এস্টেট সম্পত্তি এবং ব্যবসায় বিনিয়োগের মাধ্যমে তিনি তাঁর সম্পদকে বৃদ্ধি করেছেন।


 বর্তমান বিশ্বের শীর্ষ দশ ধনী ব্যক্তির তালিকা

প্রতিবছর, ফোর্বস, ব্লুমবার্গ, এবং অন্যান্য সংস্থাগুলি বিশ্বের শীর্ষ ধনী ব্যক্তিদের তালিকা প্রকাশ করে। এই তালিকায় শুধুমাত্র তাঁদের সম্পদের পরিমাণ নয়, বরং তাঁদের ব্যবসায়িক সাফল্য, সামাজিক প্রভাব, এবং উদ্ভাবনী শক্তির বিষয়গুলিও বিবেচনা করা হয়।

১. এলন মাস্ক

মোট সম্পত্তি: $২৪০ বিলিয়ন (প্রায়)

এলন মাস্ক, স্পেসএক্স এবং টেসলার প্রতিষ্ঠাতা, বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি। তাঁর কোম্পানিগুলি শুধু বৈদ্যুতিক গাড়ি ও মহাকাশ গবেষণায় নয়, বরং পুনঃনবীকরণযোগ্য শক্তি, নিউরাল ইন্টারফেস, এবং অন্যান্য প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনে নেতৃত্ব দিচ্ছে।

২. বার্নার্ড আর্নল্ট

মোট সম্পত্তি: $২২৫ বিলিয়ন (প্রায়)

লুই ভুইতাঁ মোয়েত হেনেসি (LVMH) গ্রুপের চেয়ারম্যান এবং সিইও, বার্নার্ড আর্নল্ট, বিশ্বের বৃহত্তম বিলাসবহুল পণ্য সংস্থার মালিক। তাঁর কোম্পানি ব্র্যান্ডগুলির মধ্যে রয়েছে ক্রিশ্চিয়ান ডিওর, হেনেসি, এবং লুই ভুইতাঁ।

 ৩. জেফ বেজোস

মোট সম্পত্তি: $১৫০ বিলিয়ন (প্রায়)

অ্যামাজনের প্রতিষ্ঠাতা জেফ বেজোস বিশ্বের অন্যতম ধনী ব্যক্তিদের মধ্যে একজন। অনলাইন খুচরা বিক্রয়, ক্লাউড কম্পিউটিং, এবং অন্যান্য প্রযুক্তিগত খাতে তাঁর বিশাল প্রভাব রয়েছে।

 ৪. বিল গেটস

মোট সম্পত্তি: $১২০ বিলিয়ন (প্রায়)

মাইক্রোসফটের সহ-প্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস দীর্ঘদিন ধরে বিশ্বের ধনী ব্যক্তিদের তালিকায় শীর্ষে ছিলেন। বর্তমানে, তিনি বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে জনস্বাস্থ্য, শিক্ষা, এবং জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষেত্রে দানবীরত্বমূলক কাজ করে যাচ্ছেন।

 ৫. ল্যারি এলিসন

মোট সম্পত্তি: $১০৫ বিলিয়ন (প্রায়)

ওরাকলের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ল্যারি এলিসন বিশ্বের বৃহত্তম সফটওয়্যার কোম্পানিগুলির মধ্যে একটি পরিচালনা করেন। তাঁর নেতৃত্বে, ওরাকল ডেটাবেস ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম এবং অন্যান্য ব্যবসায়িক সফটওয়্যার ক্ষেত্রের একটি প্রধান প্লেয়ার হয়েছে।

6. ওয়ারেন বাফেট

মোট সম্পত্তি: $১০০ বিলিয়ন (প্রায়)

বার্কশায়ার হ্যাথাওয়ের সিইও ওয়ারেন বাফেট বিশ্বের সবচেয়ে সফল বিনিয়োগকারীদের একজন হিসেবে পরিচিত। তাঁর বিনিয়োগ দর্শন এবং ব্যবসায়িক দক্ষতা তাকে "অমাহা ওরাকল" হিসেবে খ্যাতি দিয়েছে।

7. মার্ক জুকারবার্গ

মোট সম্পত্তি: $৯৫ বিলিয়ন (প্রায়)

ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা এবং মেটার সিইও মার্ক জুকারবার্গ সোশ্যাল মিডিয়া জগতের অন্যতম প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব। তাঁর প্রতিষ্ঠান সোশ্যাল মিডিয়া থেকে মেটাভার্স পর্যন্ত বিভিন্ন প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনে নেতৃত্ব দিচ্ছে।

8. ল্যারি পেজ

মোট সম্পত্তি: $৯০ বিলিয়ন (প্রায়)

গুগলের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ল্যারি পেজ প্রযুক্তি জগতের অন্যতম প্রভাবশালী ব্যক্তি। গুগলের সফলতা এবং অন্যান্য প্রযুক্তিগত প্রকল্পগুলিতে তাঁর নেতৃত্ব তাকে বিশ্বের ধনী ব্যক্তিদের মধ্যে শীর্ষে রেখেছে।

 9. সের্গেই ব্রিন

মোট সম্পত্তি: $৮৫ বিলিয়ন (প্রায়)

গুগলের সহ-প্রতিষ্ঠাতা সের্গেই ব্রিন প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনের ক্ষেত্রে তাঁর অসামান্য অবদানের জন্য পরিচিত। গুগল এবং আলফাবেটের বিভিন্ন প্রকল্পগুলিতে তাঁর অংশীদারিত্ব উল্লেখযোগ্য।

10. মুকেশ আম্বানি

মোট সম্পত্তি: $৮০ বিলিয়ন (প্রায়)

রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজের চেয়ারম্যান মুকেশ আম্বানি ভারতের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি এবং বিশ্বব্যাপী অন্যতম প্রভাবশালী ব্যবসায়ী। তাঁর ব্যবসায়িক সাম্রাজ্য তেল, পেট্রোকেমিক্যাল, টেলিকমিউনিকেশন, এবং খুচরা ক্ষেত্রে বিস্তৃত।

বিশ্বের শীর্ষ ধনীদের তালিকায় টেলর সুইফটের অন্তর্ভুক্তি তাঁর অসাধারণ প্রতিভা, পরিশ্রম, এবং বুদ্ধিদীপ্ত বিনিয়োগের প্রমাণ। এই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত অন্যান্য ব্যক্তিত্বরা শুধুমাত্র তাঁদের বিশাল সম্পদের জন্য পরিচিত নন, বরং তাঁদের উদ্ভাবনী চিন্তা, সামাজিক প্রভাব, এবং নেতৃত্বের গুণাবলীর জন্যও পরিচিত। এসব ব্যক্তিত্বের সাফল্যের গল্প আমাদের অনুপ্রেরণা দেয় এবং শেখায় যে, কঠোর পরিশ্রম, নিষ্ঠা, এবং সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে যে কেউ শীর্ষে পৌঁছাতে পারে।

Shyamal Kumar Rong

আমি মনসুকা খবরের সাংবাদিক। খবর, ভিডিও, তথ্য, গল্প পাঠাতে যোগাযোগ করুন। ফোন/হোয়াটসঅ্যাপ ৯৭৭৫৭৩২৫২৫.

নবীনতর পূর্বতন

Mansuka Khabar

Mansuka khabar
Mansuka khabar