শ্যামল রং, ঘাটাল: গুয়াহাটী IIT-তে আয়োজিত দশম India International Science Festival-2024-এ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে নির্বাচিত বিজ্ঞান শিক্ষকদের সামনে বক্তব্য রাখার বিরল সম্মান পেলেন ঘাটাল মহকুমার চন্দ্রকোনা জিরাট হাইস্কুলের বায়োলজীর শিক্ষক শুভঙ্কর ঘোষ। তিনি পশ্চিমবঙ্গ থেকে একমাত্র প্রতিনিধি হিসাবে আমন্ত্রিত হয়েছেন।
উৎসবের মূল আকর্ষণগুলির মধ্যে অন্যতম ছিল শিক্ষাক্ষেত্রে নতুন ধারণার উপস্থাপনা। এই আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্মে শুভঙ্করবাবুর বক্তব্যের বিষয় ছিল ‘Museum Concept in School Level’। তাঁর বক্তব্যে তিনি স্কুল স্তরে বিজ্ঞান শিক্ষার প্রতি ছাত্রছাত্রীদের আকর্ষণ বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে মিউজিয়াম ধারণার ব্যবহার নিয়ে তাঁর নিজস্ব অভিজ্ঞতা ও চিন্তাভাবনা তুলে ধরবেন।
জিরাট হাইস্কুলে দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষকতার সঙ্গে যুক্ত শুভঙ্করবাবু বিজ্ঞান শিক্ষার পদ্ধতিগত উন্নতিতে নিয়মিত কাজ করে চলেছেন। স্কুলে একটি ক্ষুদ্র বিজ্ঞান মিউজিয়াম তৈরি করে তিনি ছাত্রছাত্রীদের বিভিন্ন বিজ্ঞান প্রকল্প ও গবেষণায় উৎসাহিত করেছেন। তিনি বিশ্বাস করেন, শিক্ষার মাধ্যমে যদি ছাত্রছাত্রীরা হাতে-কলমে অভিজ্ঞতা অর্জনের সুযোগ পায়, তবে তাদের শেখার ইচ্ছে বহুগুণ বেড়ে যায়।
গুয়াহাটী IIT-তে উপস্থিত দেশের বিশিষ্ট বিজ্ঞানীরা ও শিক্ষাবিদেরা শুভঙ্করবাবুর এই উদ্যোগকে একটি অনন্য উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরতে আগ্রহী। তিনি তাঁর বক্তব্যে কীভাবে অল্প খরচে এবং স্থানীয় সম্পদের ব্যবহার করে একটি কার্যকর মিউজিয়াম তৈরি করা যায়, সেই পথনির্দেশ প্রদান করবেন।
India International Science Festival দেশের বিজ্ঞানচর্চা ও গবেষণার একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্ম। এখানে শিক্ষকদের অংশগ্রহণ তাদের কাজের প্রতি স্বীকৃতির প্রমাণ। পশ্চিমবঙ্গ থেকে একমাত্র নির্বাচিত প্রতিনিধি হিসাবে শুভঙ্করবাবুর এই সাফল্যে জিরাট হাইস্কুল এবং ঘাটাল মহকুমার গর্ব বহুগুণ বেড়ে গেছে।
শুভঙ্করবাবুর এই কৃতিত্বে চন্দ্রকোনা এবং ঘাটাল অঞ্চলে আনন্দের স্রোত বইছে। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এবং সহকর্মীরা এই সম্মানকে বিদ্যালয়ের দীর্ঘদিনের অধ্যাবসায় এবং শুভঙ্করবাবুর নিষ্ঠার ফল বলে মনে করছেন। শিক্ষামহলে তাঁর কাজকে আরও বেশি করে আলোচনায় নিয়ে আসার দাবি উঠেছে।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রকের উদ্যোগে এমন একটি মঞ্চে নিজের ভাবনা প্রকাশের সুযোগ পেয়ে শুভঙ্করবাবু অত্যন্ত উচ্ছ্বসিত। তিনি জানিয়েছেন, “এটি শুধু আমার নয়, আমাদের পুরো বিদ্যালয়ের কৃতিত্ব।”
এই অর্জন পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষাক্ষেত্রে নতুন উদ্দীপনার সঞ্চার করবে বলে আশা করা হচ্ছে।