নিউজ ডেস্ক,১০ডিসেম্বর: দৈনিক ও মাসিক তাপমাত্রার তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালটি হতে যাচ্ছে বিশ্বের ইতিহাসে উষ্ণতম বছর। কপারনিকাস ক্লাইমেট চেঞ্জ সার্ভিসের (C3S) তথ্যমতে, ২০২৪ সালের গড় বৈশ্বিক তাপমাত্রা প্রাক-শিল্প যুগের (১৮৫০-১৯০০) তুলনায় ১.৫৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। এই মাত্রা ২০২৩ সালের তাপমাত্রাকেও ছাড়িয়ে যাবে, যা এখন পর্যন্ত উষ্ণতম বছর হিসেবে পরিচিত ছিল।
এল নিনো প্রভাব এবং গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণের ফলে এই তাপমাত্রা বৃদ্ধি ঘটছে। গবেষণায় দেখা গেছে, কার্বন ডাই-অক্সাইডের মাত্রা ২০২৩ সালে ৪২০ পিপিএম-এ পৌঁছেছিল, যা শিল্প যুগের শুরু থেকে ৫১% বেশি। তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে সমুদ্রের উষ্ণতা, বরফ গলে যাওয়া, এবং সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা বৈশ্বিক পরিবেশগত ভারসাম্যে মারাত্মক প্রভাব ফেলছে।
২০২৪ সালে অ্যান্টার্কটিকা এবং আর্কটিক অঞ্চলে বরফের পরিমাণ রেকর্ড পরিমাণ কমে গেছে। তদুপরি, ইউরোপ, উত্তর আমেরিকা, এবং এশিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলে বন্যা, খরা, এবং দাবানলের মতো জলবায়ু বিপর্যয় ঘটছে। কপারনিকাসের মতে, অক্টোবর ২০২৪-এ ইউরোপে পঞ্চম সর্বোচ্চ উষ্ণতা রেকর্ড করা হয়েছে, যা প্রাক-শিল্প যুগের গড়ের চেয়ে ১.২৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি।
জাতিসংঘের মতে, তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে বিশ্বজুড়ে স্বাস্থ্য, অর্থনীতি, এবং শান্তি বিঘ্নিত হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা উল্লেখ করেছেন যে প্যারিস চুক্তির লক্ষ্য অর্জনের জন্য গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণ দ্রুত হ্রাস করা প্রয়োজন। এছাড়া, অভিযোজনমূলক পদক্ষেপ যেমন জলবায়ু তথ্য পরিষেবা এবং প্রাথমিক সতর্কতামূলক ব্যবস্থা জোরদার করা আবশ্যক। ২০২৪ সালের তাপমাত্রা বৃদ্ধির ধারা আমাদের ভবিষ্যতের জন্য সতর্কবার্তা। অবিলম্বে পদক্ষেপ না নিলে, জলবায়ুর পরিবর্তন মানব সভ্যতার জন্য বড় সংকট হয়ে দাঁড়াবে।