Mansuka khabar

ভারতজুড়ে যুদ্ধকালীন প্রস্তুতি: ৭ মে মক ড্রিল, বাংলায় ৩১ স্থানে মহড়া

 মনসুকা খবর, নিউজ ডেক্স: জম্মু-কাশ্মীরের পহেলগাঁওতে সন্ত্রাসী হামলার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা বেড়ে যাওয়ায়, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দেশের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আগামী ৭ মে, বুধবার, ভারতজুড়ে ২৪৪টি জেলায় এক বিশাল মক ড্রিল পরিচালনার নির্দেশ দিয়েছে। ১৯৭১ সালের পর এই প্রথম এত বড় পরিসরে নাগরিক সুরক্ষা মহড়া হতে চলেছে। পশ্চিমবঙ্গে এই মক ড্রিল ৩১টি স্থানে অনুষ্ঠিত হবে, যেখানে উত্তরবঙ্গের সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোতে বিশেষ নজর রাখা হবে।


এই মক ড্রিলটির মূল উদ্দেশ্য হলো যুদ্ধ বা জরুরি অবস্থার মতো পরিস্থিতিতে প্রশাসন ও সাধারণ মানুষজনের প্রস্তুতি নেওয়া। এর মাধ্যমে বিমান হামলা, ক্ষেপণাস্ত্র হামলা বা অন্য কোনো দুর্যোগের সময় দ্রুত এবং কার্যকরভাবে কিভাবে সাড়া দিতে হবে তা অনুশীলন করা হবে। মহড়ায় জোরে এয়ার রেড সাইরেন বাজানো হবে, যা ২-৫ কিলোমিটার পর্যন্ত শোনা যেতে পারে। এছাড়াও, ব্ল্যাকআউট, গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার নিরাপত্তা, নাগরিকদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া এবং ছদ্মবেশের মতো বিষয়গুলোর মহড়া দেওয়া হবে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী, এই মক ড্রিলে প্রশাসন, সাধারণ নাগরিক, ছাত্র, এনসিসি, নেহরু যুব কেন্দ্র ও স্বেচ্ছাসেবকরা অংশ নেবে।

পশ্চিমবঙ্গে যে ৩১টি স্থানে মক ড্রিল হবে, সেগুলোকে তিনটি শ্রেণিতে ভাগ করা হয়েছে। দ্বিতীয় শ্রেণিতে রয়েছে কোচবিহার, দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, মালদা, শিলিগুড়ি, বৃহত্তর কলকাতা, দুর্গাপুর, হলদিয়া, হাসিমারা, খড়্গপুর, আসানসোল, ফারাক্কা, বালুরঘাট, আলিপুরদুয়ার, রায়গঞ্জ, ইসলামপুর, দিনহাটা, মেখলিগঞ্জ, মাথাভাঙা, কালিম্পং, জলঢাকা, কার্শিয়াং ও কোলাঘাট। তৃতীয় শ্রেণিতে আছে বর্ধমান, বীরভূম, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, হাওড়া, হুগলি ও মুর্শিদাবাদ। উত্তরবঙ্গের সীমান্ত এলাকায় বিশেষভাবে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে, কারণ এই অঞ্চলগুলো প্রায়শই সন্ত্রাসী কার্যকলাপের জন্য ট্রানজিট রুট হিসেবে ব্যবহৃত হয়। কলকাতা বিমানবন্দরে সেন্ট্রাল ইন্ডাস্ট্রিয়াল সিকিউরিটি ফোর্স (CISF) এবং সল্টলেকে ন্যাশনাল ডিজাস্টার রেসপন্স ফোর্স (NDRF) এই মক ড্রিল পরিচালনা করবে।

মক ড্রিলের সময় সাইরেন বাজলে আতঙ্কিত না হওয়ার জন্য বলা হয়েছে। সাধারণ মানুষকে খোলা জায়গা থেকে দূরে থাকতে এবং ঘর বা নিরাপদ ভবনের ভেতরে আশ্রয় নিতে বলা হয়েছে। বিশেষ করে নিচু স্থানে আশ্রয় নেওয়া, বিদ্যুতের সংযোগ বন্ধ রাখা, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও চিকিৎসার সরঞ্জাম কাছে রাখা এবং সরকারি নির্দেশাবলী মেনে চলা জরুরি। টিভি, রেডিও বা সরকারি সতর্কবার্তার মাধ্যমে সর্বশেষ তথ্য জানতে এবং গুজবে কান না দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

অনেকে এই মক ড্রিলকে পাকিস্তানের প্রতি ভারতের একটি জোরালো বার্তা হিসেবে দেখছেন। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ পহেলগাঁও হামলার প্রতিশোধ নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সেনাবাহিনীকে সম্পূর্ণ স্বাধীনতা দিয়েছেন। এই মক ড্রিল শুধুমাত্র নাগরিক সুরক্ষাই নয়, বরং যুদ্ধের মতো পরিস্থিতিতে দেশের প্রস্তুতি কেমন, তারও একটি প্রদর্শনী। বিজেপি নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকার এই মহড়ার মাধ্যমে জনগণের মধ্যে আত্মবিশ্বাস তৈরি করতে চাইছে।

Shyamal Kumar Rong

আমি মনসুকা খবরের এডিটর। মনসুকা খবরে আপনি যেকোনো খবর, ভিডিও, তথ্য বা গল্প আমাদের সাথে শেয়ার করতে পারেন। আপনার তথ্য আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। ফোন বা হোয়াটসঅ্যাপ: ৯৭৭৫৭৩২৫২৫

নবীনতর পূর্বতন
Mansuka khabar

বিজ্ঞাপন

Mansuka khabar