শ্যামল রং, "মনসুকা খবর" কলকাতা: বছর ঘুরে এই চারটে দিন পুজোয় মেতে ওঠে বাঙালি । বাঙালির দুর্গোৎসবে চিরাচরিত ছেলেদের ঐতিহ্য ধুতি পাঞ্জাবি আর মেয়েদের শাড়ি। অষ্টমীর পুষ্পাঞ্জলি সাজ-পোশাকের সেজে ওঠে বাঙালির বারো থেকে বিরাশি।
এখন সচরাচর বারোতে ছেলেরা ধুতি-পাঞ্জাবি না পরলেও মেয়েরা কিন্তু শাড়িতে সেজে ওঠে। আর এই দুর্গাপুজোয় পুষ্পাঞ্জলি মধ্য দিয়েই প্রেম ভালোবাসা সূচিত হয় বাঙালির মনে মনে। তবে চোদ্দ থেকে চব্বিশের মনে আবেগিত প্রেমের গ্রাফ ঊর্ধ্বমুখী হলেও তাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে ৫৭ বছর বয়সে শোভন চট্টোপাধ্যায় যেভাবে প্রেমের বহিঃপ্রকাশ করছেন তা সবকিছু ছাপিয়ে যায়। শোভন বৈশাখী জুটি প্রমাণ করে দিয়েছে যেকোনো বয়সেই প্রেম ভালোবাসা করা যায়। এই শোভন বৈশাখী জুটি পরপর বেশ কয়েকটি ভিডিও প্রকাশ করে চলেছেন। কখনো পৃথিবী বদলে গেছে যা দেখি নতুন লাগে তুমি আমি একই আছি দুজনে যা ছিলাম আগে। এই গান গেয়েই মাতোয়ারা শোভন বৈশাখী।
কখনো দেখা যাচ্ছে শোভন এবং বৈশাখী কে নিত্য করতে আবার কখনো ভিক্টোরিয়া ব্রিগেড মাঠে বসে দুজনে গল্প করতে হাতে হাত ধরে হেঁটে যেতে। এ প্রেম যেন রাধা কৃষ্ণের প্রেম কেও হার মানায়। শোভন বৈশাখী কে দেখা গেল ঘোড়ার রথের গাড়ি থেকে নেমে আইসক্রিম ভেলপুরি ফুচকা খেতে। এমন কটা মানুষ আছেন এই বয়সে এসে প্রেয়শীকে নিয়ে সময়ে অসময়ে দুজনে বেরিয়ে ফুচকা খেতে যাওয়া। হয়তো এমন কম বয়সী প্রেমিক-প্রেমিকার রয়েছেন যারা এটা করে উঠতেই পারেন না। বৈশাখী কে দেখা গেল রবীন্দ্রসঙ্গীতের নয় এক্কেবারে ভালোবাসার নিবেদনের স্বমহিমায় "চুরালিয়া হে তুমনে জো দিল কো নাজার নেহি চুরানা সানাম বাদলকে মেরে তুম জিন্দেগানি" এই হিন্দি গান গেয়েই বৈশাখী শোভনের মন চুরি করে নিতে চান।
চুটিয়ে চলছে শোভন-বৈশাখী প্রেম। নেটিজেনরা তাদেরকে নিয়ে টোন টিটকারি ট্রল মিমে নেট দুনিয়া ভরিয়ে দিলেও তাদের কোনো যায় আসে যায় না। তাদের ভিডিওতে দেহ ভঙ্গিমায় কথাবার্তায় যেন বোঝাতে চান প্যায় কিয়া তো ডরনা ক্যায়া।
অনেকেই বিষয়টি বুড়ো বয়সে ঢেঁড়ো সং বলে উল্লেখ করলেও বিশেষজ্ঞদের মতে এমন কিছু মানুষ থাকেন তারা প্রফেশনাল কাজে এতই ব্যস্ত থাকেন যে তাদের জীবনের ন্যূনতম মানসিক চাহিদা গুলি পূর্ণতা পায় না। পড়াশোনা চাকরি নির্দিষ্ট নিয়ম নীতি এবং সময়ের বিপাকে নিজেকে বেঁধে ফেলেন অনেকেই। তাদের কল্পনার জগত বৃহৎ হলেও সেই জগতে বিচরণ করা সম্ভবপর হয়ে উঠেনা। অপূর্ণ থেকে যায় চাহিদা গুলি। ছোট ছোট মানসিক চাহিদা পূরণ করতে চায় সকলেই। সকলেই চায় তার মনের মানুষ তার মনের মত হোক এবং মনের সেই ছোট ছোট অপূর্ণ চাহিদাগুলো পূরণ করুক। হয়তো সেরকম সম্পর্কই ধীরে ধীরে গড়ে উঠেছে শোভন-বৈশাখী মধ্যে। ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে তাদের যথেষ্ট বয়স হলেও ভিক্টোরিয়া ব্রিগেডের মাঠে হেঁটে বেড়ানো ফুচকা খাওয়া। দুজনেই এক জায়গায় বসে কথা বলা। শহরের ঘিঞ্জি পরিবেশে সময় বেঁধে ফেলা নিয়মের জীবন থেকে মুক্তি চেয়ে জীবনের আকাঙ্ক্ষিত ছোট ছোট মানসিক চাহিদা গুলোকে পূর্ণতা প্রাপ্তি দিতে চায় দুটি মন যে কোন বয়সেই হোক। হয়তো এমনটাই ঘটেছে শোভন বৈশাখীর ক্ষেত্রে।
একজন কলকাতার মেয়র ছিলেন আর অপরজন অধ্যাপিকা, শেষ জীবনে সবকিছু ছেড়ে জীবনের ছোট ছোট চাহিদাগুলো পূরণে ব্যস্ত।
Tags
Other