আজ মনসুকা অরুণোদয় সংঘের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত হয়ে গেল এক মহতী রক্তদান শিবির। এই শিবির আজ দশটা থেকে শুরু হয়ে যায়। এই ব্লাড ডোনেশন ক্যাম্প উদ্বোধন করেন ঘাটালের এসডিও সাহেব মাননীয় সুমন বিশ্বাস মহাশয়। সংঘের সদস্য অমিয় বেরা মহাশয় বলেন মনসুকা অরুণোদয় সংঘের এই রক্তদান শিবির একটি পরম্পরা ও ঐতিহ্যে পরিণত হয়েছে। এই রক্তদান শিবির এই সংঘের পরিচালনায় ৩০ বছর অধিক ধরে সময় চলে আসছে।
এই অনুষ্ঠানে আসন অলংকৃত করেছিলেন ঘাটাল মহকুমা শাসক সুমন বিশ্বাস মহাশয়, মনসুকা অরুণোদয় সংঘের সম্পাদক শ্রীমন্ত দোলই, সঞ্জয় সামন্ত সভাপতি , অমিয় কুমার বেরা প্রাক্তন সম্পাদক, অরুণ কুমার মাল সদস্য , অনুপ কুমার পন্ডিত পঞ্চায়েত সদস্য। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন অরুণোদয় সংঘের ঘনিষ্ঠ সদস্যবৃন্দরা।
মহাকুমা শাসক ফিতে কেটে এবং মনসুকা লক্ষ্মীনারায়ন উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বিদ্যাসাগর সহ বিভিন্ন মহাপুরুষ গনের মূর্তিতে মাল্যদান করে রক্তদান শিবির এর সূচনা করেন।
এই রক্তদান শিবিরে ৪৮ জন রক্ত দান করেছেন তার মধ্যে মহিলা রক্তদাতার ছিলেন ১৪ জন। ঘাটাল ব্লাড ব্যাংকের সহযোগিতায় এই রক্তদান শিবিরটি সম্পন্ন হলো। এসডিও সাহেব বক্তৃতায় বলেন সাধারণত শীতকালে বিভিন্ন মেলা বা অনুষ্ঠানে জন্য রক্তদান শিবির হয়ে থাকে ফলে মহাকুমায় তেমন রক্তের টান পড়ে না তবে গ্রীষ্মকালে এই রক্তের ব্যাপক ঘাটতি দেখা যায়। সেই ঘাটতি মেটানোর জন্য মহকুমার বিভিন্ন স্থানের ক্লাবগুলোকে তিনি আহ্বান জানিয়েছেন যাতে এই ধরনের রক্তদান শিবির করা যায়। তিনি আরো বলেন যে বিবাহ, অন্নপ্রাশন, বিবাহ বার্ষিকী প্রভৃতি যে কোন সামাজিক অনুষ্ঠানে এমনকি বাবা-মায়ের শ্রাদ্ধেও রক্তদান শিবির করা যায়। তিনি এরকম কতকগুলি রক্তদান শিবিরে উপস্থিত ছিলেন বলেও তিনি জানান।
রক্তদান সম্পর্কে উল্লেখ করতে গিয়ে তিনি বলেন যে থ্যালাসেমিয়া বাহক যারা রয়েছেন তারা অবশ্যই বিবাহের পূর্বে রক্ত পরীক্ষা করে নিন, না হলে তাদের সন্তান-সন্ততির থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় ৫০% থেকে যায়। এছাড়াও বিভিন্ন রোগের শল্য চিকিৎসা বা গর্ভবতী মায়েরা যখন সিজার হন তাদের ক্ষেত্রে রক্ত প্রয়োজন হয়। সবশেষে তিনি বলেন যেকোনো অনুষ্ঠানে যদি এইরূপ রক্তদান শিবির করেন তাহলে সেখানে যতটা সম্ভব তিনি সব রকমের সহযোগিতা করবেন।
এছাড়া মনসুকা প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তিনি বলেন এই অঞ্চলে বাল্যবিবাহ প্রচুর পরিমাণে হচ্ছে সেটা অভিভাবকদেরকে এবং ক্লাবগুলোকে সচেতন থাকতে হবে যাতে এই ধরনের বাল্যবিবাহ আটকানো যায় এবং সমাজ সচেতনতা বৃদ্ধির উদ্যোগ নিতে হবে ।
সবশেষে ক্লাবের সম্পাদক শ্রীমন্ত দোলই মহাশয় জানান এখানে মনসুকা মূলত কৃষি প্রধান এলাকা। এই সময় ধান তোলার সময় অত্যাধিক গরম সবকিছু প্রতিকূলতাকে উপেক্ষা করে মানুষ এই সামাজিক কাজে শামিল হয়েছেন অরুণোদয় সংঘের পক্ষ থেকে রক্তদাতাদের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন।