শ্যামল রং, ঘাটাল: শরতের আকাশে বেজে উঠেছে উৎসবের সুর, আর তারই মধ্যে ঘাটালনগর আবারও সাক্ষী হতে চলেছে এক মহৎ উদ্যোগের। আগামী ৫ই নভেম্বর থেকে ১৪ই নভেম্বর, ২০২৪, প্রতিদিন সন্ধ্যা ৫:৩০ থেকে ৭:৩০ পর্যন্ত নিউ আর্ট এম্পোরিয়াম-এর দ্বিতলে আয়োজন করা হয়েছে সংস্কৃতভারতীর উদ্যোগে এক বিশেষ সংস্কৃত সম্ভাষণ শিবির। এই উদ্যোগের মূল লক্ষ্য হলো সংস্কৃতভাষার প্রতি ভালোবাসা এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে এর ব্যবহার বৃদ্ধি করা।
দক্ষিণবঙ্গের সংস্কৃতভারতী বিভাগের আয়োজনে এই দশদিন ব্যাপী শিবিরে মাত্র ২০ ঘণ্টায় দেবভাষা শেখার এক বিরল সুযোগ পাবে অংশগ্রহণকারীরা। ‘জয়তু সংস্কৃতম্, জয়তু ভারতম্’ স্লোগানে মুখরিত হবে ঘাটালের আকাশ। সংস্কৃতভারতীর এই উদ্যোগের মাধ্যমে সাধারণ মানুষ সংস্কৃত ভাষার প্রতি আকৃষ্ট হয়ে এর ঐতিহ্য, জ্ঞান ও সংস্কৃতির সমৃদ্ধির সাথে পরিচিত হতে পারবেন।
আরও পড়ুনঃ আফগান নারীদের অধিকার হরণের শেষ পর্বে তসলিমা নাসরিনের প্রতিবাদী কণ্ঠ
সংস্কৃত ভাষার গুরুত্ব এবং এই শিবিরের প্রাসঙ্গিকতা প্রসঙ্গে অরুণকুমার চক্রবর্তী বলেন, "সংস্কৃত আমাদের দেশের অন্যতম প্রাচীন ভাষা। আধুনিক সমাজে প্রায় বিলুপ্ত হতে বসা এই ভাষার পুনর্জাগরণে আমরা সচেষ্ট। সংস্কৃতের জ্ঞান শুধুমাত্র ধর্ম বা সংস্কৃতির মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়; বিজ্ঞান, গণিত, চিকিৎসা, এমনকি সাহিত্যের নানা দিকেও রয়েছে এর অবদান।"
তবে এই শিবির শুধুমাত্র ভাষা শেখানোর মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। এখানে ভাষার মৌলিক ব্যাকরণগত জ্ঞান, সংস্কৃত উচ্চারণ এবং সাধারন কথোপকথন শেখানো হবে। বিশেষজ্ঞ প্রশিক্ষকরা এ শিবিরে উপস্থিত থাকবেন, যারা শিবিরের প্রতিটি শ্রেণিকে সহজবোধ্যভাবে এবং জীবন্ত উদাহরণের মাধ্যমে ভাষার প্রাথমিক ধারনা প্রদান করবেন। উল্লেখ্য, বিগত বছরগুলিতে এই শিবিরে বহু শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেছেন এবং তারা নিজেদের জীবনে সংস্কৃত ভাষার গুরুত্ব উপলব্ধি করেছেন।
সংস্কৃতভারতীর এক কর্মী শ্যামল চক্রবর্তী মহাশয় বলেন, "শুধু শিখলেই হবে না, প্রতিদিনের জীবনে প্রয়োগ করাই হল আসল উদ্দেশ্য। আমাদের সংস্থা চাইছে যেন মানুষ, বিশেষ করে যুবসমাজ, এই ভাষার মাধ্যমে নিজেদের মনের ভাব প্রকাশ করতে পারেন।"
উৎসাহী ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষক এবং সংস্কৃতপ্রেমী সকলের জন্য এই শিবির এক সুবর্ণ সুযোগ। যারা নিজেদের জীবনে দেবভাষার প্রভাবে আলোকিত হতে চান, তাদের কাছে এটি একটি মাইলফলক হতে চলেছে। সবার কাছে আবেদন জানানো হয়েছে যেন তারা এই সুযোগটি গ্রহণ করেন এবং সংস্কৃতময় জীবন গড়ে তুলতে অগ্রসর হন।