শ্রাবণ মাসের প্রতি সোমবার শিবের পুজো করার নিয়ম

শ্রাবণ মাসের প্রতি সোমবার শিবের পুজো করার প্রচলন রয়েছে গোটা দেশে। মনে করা হয় শ্রাবণ মাসের সোমবার শিবের ব্রত করলে দেবাদিদেব তুষ্ট হন ও ভক্তের মনস্কামনা পূর্ণ করেন। তবে কেবল ভারতে নয়, গোটা দেশেই রয়েছে এই পুজোর রীতি। আজ শ্রাবণ মাসের প্রথম সোমবার। শ্রাবণ মাসের সোমবারের ব্রত পালন করতে চাইলে কিছু নিয়ম অবশ্যই মেনে চলুন ।

শিবের অপর নাম ভোলানাথ। শীঘ্র প্রসন্ন হন তিনি। জল ও একটি বেলপাতা অর্পণ করলেই শিবকে প্রসন্ন করা যায়। শ্রাবণের সোমবারে সকালে তাড়াতাড়ি উঠে স্নান করে শিব মন্দিরে যান। শিব ও পার্বতীকে পুজোর সমস্ত উপকরণ অর্পণ করুন। শিবকে জলাভিষেক করার সময় শিব মন্ত্র জপ করতে ভুলবেন না।

শ্রাবণ মাসের মহাদেবের পুজোয় তিল অর্পন করে মহামৃত্যুঞ্জয় মন্ত্র উচ্চারণ করলে দ্রুত সুফল পাওয়া যায়। শরীর থেকে সমস্ত রোগ দ্রুত নিরাময় হয়ে যায়। শ্রাবণ মাসের ব্রত পালনের সময় উপবাসের আগের দিন একবেলা নিরামিষ আহার গ্রহণ করার রীতি রয়েছে। একে পারন বলা হয়। পারনের দিন একবেলা সেদ্ধ খাওয়ার রীতি রয়েছে। এদিনে কোনও ফোঁড়ন দিয়ে রান্না করা খাবার খাওয়া নিষিদ্ধ। খাওয়ার পাতে এদিনে লবনের পরিবর্তে সন্ধব লবন ব্যবহার করা উচিত। উপবাসের দিন সকাল বেলায় স্নান সেরে চার প্রহরে শিবলিঙ্গে জল ঢালা উচিত।

বেলপাতা, ধূতরা ফুল ও নীলকন্ঠ ফুল মহাদেবের অত্যন্ত পছন্দের। চার প্রহরে একে একে দুধ, মধু, ঘি ও গঙ্গাজল দিয়ে শিবের মাথায় জল ঢালার রীতি রয়েছে। মহাদেবের ব্রতর সময় জল পান করার নিয়ম নেই, নির্জলা থেকে উপবাস রাখতে হয়। তাই ব্রত ভাঙ্গার পর অন্তত ৬ থেকে ৮ গ্লাস জল অবশ্যই পান করুন। এতে শরীর সুস্থ থাকবে। বিধি মেনে শ্রাবণ মাসে মহাদেবের ব্রত পালন করলে সকল মনের ইচ্ছে পূরণ হয়। মহাদেবের আশীর্বাদ পেতে এদিন শিবের আরাধনা করতে ভুলবেন না। বেদে মহাদেবের পুজোর জন্য কয়েকটি ফুল-পাতা নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। এবার সেগুলি সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।

বেল পাতা

হিন্দু ধর্ম অনুযায়ী বেল পাতা অত্যন্ত শুভ বলে মনে করা হয়। পবিত্র এই পাতা মহাদেবের শ্রীচরণে উত্‍সর্গ করা হয়। বেল পাতাকে দেবাদিদেবের ত্রিনয়নের মতো দেখতে বলেই বেল পাতা দিয়ে মহাদেবের পুজোর রীতি প্রচলিত।

অপরাজিতা

মহাদেবের অপর নাম নীলকণ্ঠ। সমুদ্র মন্থনের সময় যে প্রচণ্ড বিষ উঠেছিল, সমগ্র সৃষ্টিকে তার থেকে বাঁচাতে সেই বিষ নিজের কণ্ঠে ধারণ করেছিলেন মহাদেব। ফলে তাঁর সারা শরীর নীলবর্ণ ধারণ করে। অপরাজিতা ফুলের রং ঠিক মহাদেবের গাত্রবর্ণের মতোই। মহাদেবের অপার সহ্য শক্তির প্রতীক এই ফুল শিব পুজোয় ব্যবহৃত হয়।

চাঁপা

মনে করা হয় চাঁপা ফুলের গন্ধ আশীর্বাদ ও শুভকামনা বয়ে আনে। মন ভালো করে দেওয়া গন্ধের চাঁপা ফুল শিবের পায়ে উত্‍সর্গ করা হয়। ঠিক যেমন ভক্তেরা তাঁদের সমগ্র সত্ত্বা মহাদেবের পায়ে উত্‍সর্গ করেন।

আকন্দ

মনে করা হয় আকন্দ ফুলের গন্ধে হারানো স্মৃতি ফিরে আসে। আকন্দ ফুল দিয়েও মহাদেবের পুজোর রীতি প্রচলিত।

কল্কে

কল্কে ফুলের গাঢ় হলুদ রং ত্যাগের প্রতীক। দেবাদিদেব মহাদেব নিজেও ত্যাগ ও তিতিক্ষার প্রতীক। তাই কল্কে ফুল দিয়ে শিবপুজো করা হয়ে থাকে।

জুঁই

ছোট্ট ছোট্ট জুঁই ফুলের অপূর্ব মিষ্টি সুবাস মহাদেবকে উত্‍সর্গ করা হয়ে থাকে। ক্ষমার প্রতীক দেবাদিদেবের অত্যন্ত পছন্দের এই ফুল।



Shyamal Kumar Rong

আমি মনসুকা খবরের সাংবাদিক। খবর, ভিডিও, তথ্য, গল্প পাঠাতে যোগাযোগ করুন। ফোন/হোয়াটসঅ্যাপ ৯৭৭৫৭৩২৫২৫.

নবীনতর পূর্বতন

বিজ্ঞাপন

Mansuka khabar

বিজ্ঞাপন

Mansuka khabar
Mansuka khabar