শ্যামল রং, "মনসুকা" খবর মনসুকা: কালিপুজো ও দীপাবলি উৎসব-র একদিন পরেই জঙ্গলমহলে হয় বাঁদনা পরব এবং সহরায়। সহরায় শব্দটি এসেছে ‘সহরাও’ থেকে। যার অর্থ সম্বর্ধনা বা প্রশংসা।
গো-মহিষাদির প্রশংসা করে আগামী ফসলের সম্ভাবনায় আনন্দ-উৎসব। জঙ্গলমহলের মূলবাসীদের বিশ্বাস, কালীপুজোর রাতে মর্ত্যলোকের প্রতিটি গোয়াল পরিদর্শনে আসেন স্বয়ং মহাদেব। তাই নোংরা ঝেঁটিয়ে, ধূপ-ধুনো জ্বালিয়ে গোয়ালঘর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে রাখা হয়। কালীপুজোর রাতে গান শুনিয়ে গরুর সেবা করা হয়। প্রতিপদের দিন হয় গোয়াল পুজো আর দ্বিতীয়ার দিন পরবের অন্তিম পর্যায়ে অনুষ্ঠিত হয় ‘গরু খুঁটান’। তবে কোনও কোনও এলাকায় পূর্ণিমা পর্যন্ত যে কোনও দিনে ‘গরু খুঁটান’ হয়।
“বন্দনা থেকে কিংবা বন্ধন থেকেও ‘বাঁদনা’ শব্দটা এসে থাকতে পারে। কারণ পরবের শেষ দিনে খুঁটিতে গরু-মোষদের বেঁধে রেখে শারীরিক কসরৎ করানো হয়।” কার্তিক মাসের অমাবস্যার রাত থেকে শুরু হওয়া বাঁদনা পরব শেষ হয় ভ্রাতৃদ্বিতীয়ার দিন।
ঘাটালের বিভিন্ন স্থানে এই উৎসব "শুকভেটা" নামেও পরিচিত। কালীপুজোর পরদিন ভোরে শুকতারাকে দেখে গরু মহিষদেব পুজো করা হয় । ভাইফোঁটার দিন ভোরে বাড়ির সম্মুখের তুলসী তলায় দাঁড়িয়ে সংসারের সুখ কামনার ও গরু মহিষদেব প্রশংসায় বা পুজো নিবেদনে প্রথমে আকাশের দক্ষিণ পশ্চিম কোনে উজ্জ্বল নক্ষত্র শুকতারাকে দেবতা জ্ঞানে প্রার্থনা করে , তারপর তুলসী মন্দিরে বরন করা হয়। বরনডালিতে থাকে কাঁচা হলুদ বাটা , আতপ চাল বাটার মাঝে গর্ত করে সরিষা তেল দিয়ে সলতে সহযোগে পঞ্চপ্রদীপ করা হয়।
বরনডালিতে থাকে কলাছড়া, ধান, দূর্বা, প্রদীপ ধূপ,আলতা, সিঁদুর, গোটা সুপারি, মোমবাতি জ্বালিয়ে গোয়ালে গিয়ে বলদ গরুকে পা ধুইয়ে মাথায় হলুদ মাখিয়ে মালা পরিয়ে বরন করা হয়। তারপর সেই গরুকে কলা, আঁখ, পিঠে পুলি খাওয়া হয়। তারপর গাভী গরুকে পা ধুইয়ে আলতা সিঁদুর পরিয়ে, মাথায় হলুদ বাটা মাখিয়ে বরন করা হয় বলদ গরুর মতো গাভীকেও কলা আঁখ পিঠে পুলি খাওয়ানো হয়।
এই সমস্ত কাজ সুন্দর ভাবে সম্পন্নের পর গোয়াল থেকে সেই বরন ডালি নিয়ে পুনরায় বাড়িতে আসে আর বরনডালিতে জ্বলতে থাকা প্রদীপের তাপ সারা ঘরে ছড়িয়ে দেওয়ার সাথে সাথে পরিবারের সকল সদস্যদের শরীরেও লাগানো হয় । এই ভাবে সখভেটা নামক শুভ অনুষ্ঠানটি সম্পন্ন হয় । তবে এই উৎসবের আগের দিন গরুদেরকে গা ধুয়ে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করিয়ে নেয়া হয়। ঘাটাল মহকুমার বিভিন্ন স্থানে এই উৎসবে মাটির দেওয়ালে নানান রকম আলপনা এবং ছবি আঁকার রেওয়াজ ছিল বছর দশেক আগে পর্যন্ত তবে এই উৎসবের সাথে জঙ্গলমহলের আদিবাসী পরিবারের এখনো এই আলপনার রেওয়াজ চলে আসছে।
এই সমস্ত কাজ সুন্দর ভাবে সম্পন্নের পর গোয়াল থেকে সেই বরন ডালি নিয়ে পুনরায় বাড়িতে আসে আর বরনডালিতে জ্বলতে থাকা প্রদীপের তাপ সারা ঘরে ছড়িয়ে দেওয়ার সাথে সাথে পরিবারের সকল সদস্যদের শরীরেও লাগানো হয় । এই ভাবে সখভেটা নামক শুভ অনুষ্ঠানটি সম্পন্ন হয় । তবে এই উৎসবের আগের দিন গরুদেরকে গা ধুয়ে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করিয়ে নেয়া হয়। ঘাটাল মহকুমার বিভিন্ন স্থানে এই উৎসবে মাটির দেওয়ালে নানান রকম আলপনা এবং ছবি আঁকার রেওয়াজ ছিল বছর দশেক আগে পর্যন্ত তবে এই উৎসবের সাথে জঙ্গলমহলের আদিবাসী পরিবারের এখনো এই আলপনার রেওয়াজ চলে আসছে।
এইদিন বাড়ির দেওয়ালে আলপনা দেয়া হয় খড়ি মাটি নানান রঙ দিয়ে। তার আগে মাটির দেওয়ালে ভালো করে মাটি দিয়ে মসৃণ করে দেয়াল তৈরি করে নেয়া হয়। দেওয়ালটি সম্পূর্ণরূপে নীল রঙ বা সাদা রঙ দিয়ে প্রথমে রঞ্জিত করে নেয়া হয়। তারপর সেই দেওয়ালের উপর নানারকম আলপনা করা হয়। এই উৎসবে সমস্ত কাজ গুলি মেয়েরা করে থাকেন।
Tags
Culture