শ্যামল রং, "মনসুকা খবর" মনসুকা: আমরা জানি মুখ্যমন্ত্রীর কার্যালয় নবান্ন । নবান্ন শব্দের অর্থ হয়তো অনেকেই আমরা জানি না আবার অনেকেই জানেন। খাদ্য সাথী প্রকল্প দুয়ারে রেশন অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আড়াই হালা ধানকে নিয়ে প্রনাম করলেন পুজো করলেন।
পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশে হিন্দুদের একটি প্রাচীন উৎসব হলো নবান্ন উৎসব। নবান্ন কথার অর্থ হল নতুন অন্ন। অর্থাৎ নতুন চালের ভাত। এই উৎসবটি পালন করা হয় পৌষ-মাঘ মাসে। অঘ্রানে ধান কেটে সেই ধান থেকে নতুন অন্ন বা পিঠাপুলি তৈরি করে খাওয়া হয় এই অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে। নতুন চালের নানান পিঠেপুলি তৈরি করে বাংলার হিন্দু পরিবার।
পিতৃপুরুষকে উৎসর্গ করে এই পিঠেপুলি দেওয়া হয় কাককে। প্রচলিত আছে যে মৃত্যুর পর পিতৃ পুরুষের আত্মা কাছে পৌঁছে যায় এই পিঠে পুলি কাকের মধ্য দিয়ে। হিন্দু মতে মৃত্যুর পর যে শ্রাদ্ধ করা হয় তাতে কাককে বিভিন্ন খাদ্যদ্রব্য গ্রহণ করানো হয়। তাদের বিশ্বাস কাকের মধ্য দিয়েই পূর্বপুরুষ আত্মা খাদ্যদ্রব্য ভক্ষণ করে থাকেন।
এই নবান্নের সময়ও পূর্ব পুরুষদের জন্য পিঠেপুলি অন্যান্য খাদ্যদ্রব্য উৎসর্গ করা হয় কাককে। তবে এই আচার ধীরে ধীরে বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। এই নবান্ন উৎসব শুরুর আগে অঘ্রাণ মাসে ধান কাটার সময় ধান কাটার পূর্বে জমি থেকে আড়াই হালা ধান কেটে নেওয়া হয় সেই ধান পূজা করার জন্য বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। বাড়িতে আসার পর উপস্থিত ব্যক্তিদের কে কদমা বাতাসা খাওয়ানো হয়। ধান কেটে আনা ব্যক্তির পা ধুইয়ে দেওয়া হয়। সেই আড়াই হালা ধানকে প্রতি লক্ষ্মী বারে লক্ষ্মী পুজো করা হয়। পৌষ মাসের শেষে পৌষ সংক্রান্তিতে সেই ধান দিয়ে লক্ষ্মী পুজো করা হয় এবং বাউড়ি বাঁধা হয়।
কোথাও কোথাও আবার মাঘ মাসের শেষে এই অনুষ্ঠান হয়। পৌষ মাসের শেষে পিঠেপুলি এবং নতুন পায়েস করে এই নবান্ন উৎসব পালন করা হয় বাঙালির ঘরে ঘরে। এই নবান্ন উৎসবটি একটি অসাম্প্রদায়িক উৎসব। জাতি ধর্ম নির্বিশেষে সকল বাঙালি এই উৎসব পালন করে থাকেন।
Tags
Culture