শ্যামল রং, ২২ আগস্ট, ২০২৪: পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সম্প্রতি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে এক খোলা চিঠি লিখেছেন। এই চিঠিতে তিনি দেশে ক্রমবর্ধমান ধর্ষণ এবং হত্যার ঘটনার প্রতি তাঁর গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চিঠিতে জানান যে, সারা দেশে প্রতিদিন প্রায় ৯০টি ধর্ষণের ঘটনা ঘটছে, যা সমাজের মনুষ্যত্ব এবং নৈতিকতার উপর মারাত্মক আঘাত হানছে।
তিনি যেন বোঝাতে চেয়েছেন প্রতিদিন দেশে ঘটে যাওয়া এই ধরনের অপরাধ শুধু নির্যাতিতার জীবনকেই ধ্বংস করছে না, বরং সমাজের বিশ্বাস ও নিরাপত্তা নিয়ে গভীর প্রশ্ন তুলছে। মুখ্যমন্ত্রী মনে করেন, এই পরিস্থিতি দেশের প্রতিটি নাগরিকের জন্য উদ্বেগের বিষয় এবং তাৎক্ষণিকভাবে এটি প্রতিরোধ করা প্রয়োজন।
চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রী বন্দ্যোপাধ্যায় কেন্দ্রীয় সরকারকে একটি কঠোর আইন প্রণয়নের প্রস্তাব দিয়েছেন, যাতে এই ধরনের জঘন্য অপরাধের সঙ্গে যুক্ত অপরাধীদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির বিধান নিশ্চিত হয়। তিনি আরো বলেন, "এই ধরনের মামলার বিচার ১৫ দিনের মধ্যে শেষ করা উচিত এবং ফাস্ট ট্র্যাক বিশেষ আদালতের মাধ্যমে দ্রুত বিচার নিশ্চিত করা উচিত।"
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতে, কঠোর কেন্দ্রীয় আইন এবং দ্রুত বিচারের ব্যবস্থা না করা হলে অপরাধের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে। "আমাদের সমাজের নারীদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে আমরা আর সময় নষ্ট করতে পারি না," তিনি জোর দিয়ে বলেন। তিনি উল্লেখ করেছেন, এই ধরনের অপরাধ বন্ধ করা প্রতিটি নাগরিকের নৈতিক ও সামাজিক দায়িত্ব।
এছাড়াও, তিনি এই গুরুতর পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন এবং দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য তাঁর হস্তক্ষেপ কামনা করেন। প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে লেখা এই চিঠি দেশজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে এবং আইন ও শাসনব্যবস্থার দুর্বলতাকে কেন্দ্র করে নতুন করে বিতর্ক শুরু করেছে। মুখ্যমন্ত্রীর এই পদক্ষেপ বিরোধী দলগুলিরও সমর্থন পেয়েছে। তারা মনে করছে, নারীদের সুরক্ষায় তৎপরতা এবং কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া ছাড়া অন্য কোনো পথ নেই।
উল্লেখ্য, দেশে নারী নির্যাতন ও ধর্ষণের ঘটনা নিয়ে বিভিন্ন সময়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে, কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই চিঠি পরিস্থিতির গুরুত্বকে নতুন মাত্রায় তুলে ধরেছে। অনেকে আশাবাদী যে, প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর এই বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।