শ্যামল রং, মেদিনীপুর: পশ্চিমবঙ্গের সামাজিক উন্নয়নমূলক প্রকল্প ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’ রাজ্যের মহিলাদের ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। কেন্দ্রীয় সরকারের সাম্প্রতিক রিপোর্টে উঠে এসেছে, রাজ্যে প্রকল্পটি গৃহীত হওয়ার পর থেকে মহিলাদের আর্থিক স্বনির্ভরতা এবং গৃহস্থালীর ব্যয়ের সামর্থ্য উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।
কেন্দ্রীয় সরকারের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পশ্চিমবঙ্গে গড় বার্ষিক মাথাপিছু ক্রয়ক্ষমতা এক বছরে ৫.৩৯ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। দেশজুড়ে যেখানে গড় বৃদ্ধির হার অনেক কম, সেখানে পশ্চিমবঙ্গে এই প্রকল্প উল্লেখযোগ্য সাফল্য দেখিয়েছে। এক প্রতিবেদনে আরও জানানো হয়েছে, রাজ্যের একাধিক পরিকল্পনা যেমন কন্যাশ্রী, রূপশ্রী, এবং খাদ্যসাথী ইতিমধ্যেই দেশের অন্যান্য রাজ্যের কাছে মডেল হিসেবে পরিচিত হয়েছে।
লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পটি গৃহিণীদের সরাসরি আর্থিক সহায়তা প্রদান করে। মাসিক ১০০০ থেকে ১২০০ টাকা পর্যন্ত এই অর্থ মহিলাদের দৈনন্দিন প্রয়োজন পূরণে সহায়ক ভূমিকা রাখছে। বাড়ির ছোটখাটো খরচ থেকে শুরু করে সন্তানদের শিক্ষার খরচ, এমনকি নিজের ছোট ব্যবসা শুরুর ক্ষেত্রেও এই অর্থ সহায়ক প্রমাণিত হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই অর্থ গৃহস্থালীর ক্রয়ক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি রাজ্যের স্থানীয় বাজারকেও চাঙ্গা করেছে।
হাউসহোল্ড কনজাম্পশন এক্সপেনডিচারের সাম্প্রতিক রিপোর্ট অনুসারে, পশ্চিমবঙ্গে মাথাপিছু গড় ক্রয়ক্ষমতা ৩৮৬০ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ৪২৪৭ টাকা। এই বৃদ্ধির জন্য রাজ্যের লক্ষ্মীর ভাণ্ডার সহ আর্থিক নীতিগুলি বিশেষভাবে দায়ী বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা।
তবে, কেন্দ্রীয় সরকারের এই প্রতিবেদনের পরেও কিছু বিরোধী দল প্রশ্ন তুলেছে প্রকল্পের দীর্ঘমেয়াদী টেকসইতা নিয়ে। তাদের বক্তব্য, আর্থিক সহায়তার চেয়ে কর্মসংস্থান সৃষ্টির দিকে রাজ্যের মনোযোগ দেওয়া উচিত।
সমালোচনাকে পাশে রেখে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্প ইতোমধ্যেই রাজ্যের বিভিন্ন স্তরে ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। মহিলারা নিজেদের আর্থিক স্বাধীনতার পাশাপাশি পরিবারের সামগ্রিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখছেন।