শ্যামল রং, কলকাতা: বঙ্গোপসাগরের উত্তাল জলরাশিতে নতুন করে নিম্নচাপ তৈরি হয়েছে, যা আগামী কয়েকদিনের মধ্যে ঘূর্ণিঝড়ে রূপান্তরিত হতে পারে। ২০শে অক্টোবর দুপুর ১:৩০ মিনিটে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, বকখালী থেকে প্রায় ৮৮০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপূর্বে উত্তর আন্দামান সাগর এবং সংলগ্ন পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগরে এই নিম্নচাপ অবস্থান করছে। এর বর্তমান ঝড়ের গতিবেগ ঘন্টায় ৩০ কিলোমিটার এবং সর্বনিম্ন বায়ুচাপ ১০০৬ মিলিবার।
আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাস অনুসারে, এই নিম্নচাপ ধীরে ধীরে শক্তি বাড়িয়ে ২৩শে অথবা ২৪শে অক্টোবরের মধ্যে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে। নতুন এই ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ করা হয়েছে "ডানা"। আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ২৪শে অথবা ২৫শে অক্টোবরের মধ্যে এটি উত্তর উড়িষ্যা উপকূল অথবা পশ্চিমবঙ্গের উপকূলে আছড়ে পড়তে পারে। এই পরিস্থিতির প্রভাব ২৩শে অক্টোবর থেকেই পশ্চিমবঙ্গে পড়তে শুরু করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ইতিমধ্যেই রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টির সতর্কতা জারি করা হয়েছে। বিশেষ করে উপকূলবর্তী এলাকাগুলোতে, যেমন পূর্ব মেদিনীপুর, দক্ষিণ ২৪ পরগণা, এবং উত্তর ২৪ পরগণার কিছু অংশে ভারী বৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে। এই ঝড়ের কারণে সমুদ্রের জলস্তর বেড়ে যেতে পারে এবং জলস্তরের ওঠানামার ফলে উপকূলবর্তী গ্রামগুলিতে ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে।
বৃষ্টি এবং ঝড়ের সম্ভাব্য প্রভাবে শহর এবং গ্রামীণ এলাকায় যোগাযোগ ব্যবস্থায় ব্যাঘাত ঘটতে পারে। পাশাপাশি, বিদ্যুৎ সংযোগ এবং অন্যান্য জরুরি পরিষেবাতেও প্রভাব পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কায় মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যাওয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। ২২শে অক্টোবর থেকে ২৫শে অক্টোবর পর্যন্ত মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। যেসব নৌকা ইতিমধ্যে সমুদ্রে রয়েছে, তাদের দ্রুত নিরাপদ স্থানে ফিরে আসার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সমুদ্র উত্তাল থাকবে বলে জানানো হয়েছে, তাই এই সময়ে মাছ ধরার কাজ ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে।
আরও পড়ুনঃ শিলিগুড়িতে বিহারী যুবকদের হেনস্থা: বাংলা পক্ষের ভূমিকার গভীর পর্যালোচনা
আবহাওয়া দপ্তর থেকে জানানো হয়েছে, স্থলভাগে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব এবং এর সম্ভাব্য গতিবেগ সম্পর্কে পরে বিশদে জানানো হবে। আপাতত সবাইকে সতর্ক থাকার এবং পরিস্থিতির উপর নজর রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। যতই ঘূর্ণিঝড় "ডানা" উপকূলের দিকে এগিয়ে আসবে, তার গতি ও প্রভাব সম্পর্কে আরও সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া যাবে।